কারখানাতে ক্ষেত খামারে

কারখানাতে ক্ষেত খামারে
শহর গাঁয়ে আর পাহাড়ে
বেলা অবেলা সকল বেলা
টানছি বোঝা ঠেলছি ঠেলা
মহাজনের মেশিন চালাই
সাহেব সুবার বাড়ী বানাই
এই কপালে কিছু নাই
আমরা মজুর পথে বেড়াই
আমরা খাটি- হেঁইও
ফসল ফলাই- হেঁইও
তাইতো গানে আগুন ঝড়াই
এই নয়া জামানা- হেঁইও
দেয় নিশানা- হেঁইও
সাবাস জোয়ান- হেঁইও
হও আগুয়ান- হেঁইও
সাবধানে ভাই আমরা সবাই
মজুর কিষাণ বাঁচাই পরাণ
পেটের টানে- হেঁইও
সবাই জানে- হেঁইও
হেইওরে হেইও (৪) ॥

রাতের শেষে আলো যেমন
আলোয় ভরায় সারা ভূবন
আসবে আসবে সেই সুদিন
আসবে সমাজ শোষণহীন
আসবে আসবে সেই স্বরাজ
সাম্যবাদের শ্রমিকরাজ
এসো এসো শ্রমিক ভাই
এবার সবাই করবো লড়াই
সবার মুক্তি- হেঁইও
অবশেষে- হেঁইও
আসবে আসবে সকল দেশে
এই নয়া জামানা- হেঁইও
দেয় নিশানা- হেঁইও
সাবাশ জোয়ান- হেঁইও
হও আগুয়ান- হেঁইও
সাবধানে ভাই আমরা সবাই
মজুর কিষাণ বাঁচাই পরাণ
পেটের টানে- হেঁইও
সবাই জানে- হেঁইও
হেইওরে হেঁইও (২) ॥

গ্রাম থেকে জেগে উঠো, শহর থেকে জেগে ওঠো

কথা ও সুর : মাহমুদ সেলিম ও অলক দাশগুপ্ত

গ্রাম থেকে জেগে উঠো, শহর থেকে জেগে ওঠো
মাঠ প্রান্তর থেকে, কারখানা কল থেকে
দৃপ্ত শপথে জেগে ওঠো
বিশ্বগ্রাসী দাবনটাকে বিশ্বমানব দাঁড়াও রুখে ॥

যারা ঈগলের হিংস্র ডানায় ঢাকে সুনীল আকাশ
যারা পারমাণবিক বিষে বিষাক্ত করছে বাতাস
যারা সন্ত্রাসে হত্যায় দেশে দেশে রক্ত ঝরায়
যারা নিরীহ শিশুর প্রাণ বোমার আঘাতে কেড়ে নেয়
রুখে দাও, এসো রুখে দাও
সেই বিশ্বগ্রাসী দানবটাকে বিশ্বমানব দাঁড়াও রুখে ॥

যারা কেড়ে নেয় বিশ্বের শিশুদের মুখ থেকে গ্রাস
যারা ধর্মের নামে হানে অস্ত্র-মৃত্যু-সন্ত্রাস
যারা জঙ্গীদমন ছলে দেশে দেশে গাড়ছে ঘাঁটি
যারা ইচ্ছে হলেই লোটে তেল, গ্যাস, দেশের মাটি
রুখে দাও, এসো রুখে দাও
সেই বিশ্বগ্রাসী দানবটাকে বিশ্বমানব দাঁড়াও রুখে ॥

এই নবান্নে এই হেমন্তে কাটা হবে ধান

কথা : সুকান্ত ভট্টাচার্য
সুর : শেখ লুতফর রহমান

এই নবান্নে এই হেমন্তে কাটা হবে ধান,
আবার শূন্য গোলায় ডাকবে ফসলের বান-
পোষ পার্বণে প্রাণ কোলাহলে
ভরবে গ্রামের নীরব শ্মশান।
তবুও এ হাতে কাস্তে তুলতে কান্না ঘনায়ঃ
হলকা হাওয়ায় বিগত স্মৃতিকে ভুলে থানা দায়;
গত হেমন্তে মরে গেছে ভাই ছেড়ে গেছে বোন
পথে প্রান্তরে খামারে মরেছে যত পরিজন
নিজের হাতে জমি ধান-বোনা
বৃথাই ধূলোতে ছড়িয়েছে সোনা,
কারোরই ঘরেতে ধান তোলবার
আসে নি শুভক্ষণ-
তোমার আমার ক্ষেত ফসলের অতি ঘনিষ্ঠ জন।
এবার নতুন জোরালো বাতাসে
জয়যাত্রার ধ্বনি ভেসে আসে,
পিছু মৃত্যুর ক্ষতির নির্বচন-
এই হেমন্তে ফসলেরা বলেঃ
কোথায় আপন জন ?
তারা কি কেবল লুকোনো থাকবে
অক্ষমতার গ্লানিকে ঢাকাবে।
প্রাণের বদলে যারা
প্রতিবাদ করেছে উচ্চারণ ?
এই নবান্নে প্রতারিতদের হবে না নিমন্ত্রণ ।

বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এল ঐ

কথা ও সুর : কাজী নজরুল ইসলাম

বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এল ঐ
এল ঐ রক্ত যুগান্তর রে
বল জয় সত্যের জয় আসে ভৈরব বরাভয়
শোন অভয় ঐ রথ ঘর ঘর রে ॥

রে বধির শোন পেতে কান
ওঠে ঐ কোন মহা গান
হাঁকছে বিষাণ ডাকছে ভগবান রে ।
জগতে লাগলো সাড়া জেগে ওঠ উঠে দাঁড়া
ভাঙ পাহারা মায়ার কারা ঘর রে।
যা আছে যাক না চুলায় নেমে পড় পথের ধূলায়
নিশান দোলায় ঐ প্রলয়ের ঝড় রে ॥

সে ঝড়ের ঝাপটা লেগে ভীমাবেগে উঠুক জেগে
পাষাণ ভেঙে প্রাণঝরা নির্ঝর রে।
ভুলেছি পর ও আপন ছিঁড়েছি ঘরের বাঁধন
স্বদেশ স্বজন স্বদেশ মোদের ঘর রে
যারা ভাই বদ্ধ কুয়ায় খেয়ে মার জীবন গোঁয়ায়
তাদের শোনাই প্রাণজাগা মন্তর রে ॥

দিল ডাক রক্তে রক্তে তপ্ত ফাল্গুন

কথা : মো. রফিকুজ্জামান
সুর : সুজেয় শ্যাম

দিল ডাক রক্তে রক্তে তপ্ত ফাল্গুন
অযুত দুর্জয় প্রাণ দীপ্ত আবেগ নিয়ে দুলছে
অযুত দুর্জয় সাগর জোয়ার হয়ে ফুলছে ॥

জ্বলছে ফাগুন আগুন হয়ে আজ পথে পথে
জ্বলছে ফাগুন দারুণ রোষে আজ জনমতে
বঞ্চিত বুকের হাজার বছরের ক্ষোভ
শৃঙ্খল বন্ধন খুলছে ॥

মিলছে আজ সবার ক্ষুদ্ধ হাত হাতে হাতে
মিলছে এবার সবার কণ্ঠধ্বনি প্রতিবাদে
ঝঞ্জার বেগে উড়িয়ে আঁধারের রাত
নিদ্রিত সূর্যকে তুলছে ॥