ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিমা ভাঙচুরে জড়িতদের বিচার দাবিতে সাংস্কৃতিক সমাবেশ

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর তিনটি ইউনিয়নের ১৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। মন্দিরে হামলা এবং প্রতিমা ভাঙচুরকারীদের বিচার দাবিতে ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে এ দাবি জানান বক্তারা। শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশে যোগ দেন সমমনা প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দও।

সমাবেশের শুরুতেই দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। “এ মাটি নয় জঙ্গিবাদের, আ মাটি মানবতার”, “তুমি মানুষ, আমি মানুষ, সকল এক মায়ের সন্তান” এবং “যেদিন হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খৃস্টান, জাতি-গোত্রের ভেদ নাহি রবে”— এই গান তিনটি গেয়ে শোনান তারা। এরপর উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে’র সভাপতিত্বে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। এ পর্বে বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ও ঠাকুরগাঁও জেলা সংসদের সভাপতি সেতারা বেগম, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত এবং আকরামুল হক। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান।

সমাবেশে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে হামলার পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত একজন অপরাধীকেও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। গত ছয় মাসে দেশে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যার কোন বিচার হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে একদিন হয়তো সংখ্যায় কম এমন জনগোষ্ঠীর মানুষ দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে কিন্তু এই জঙ্গিবাদ চলতেই থাকবে, ঠিক যেমন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে। তাই, এখনই জঙ্গীবাদের লাগাম টেনে ধরতে হবে বলে মন্তব্য করেন উদীচীর সাধারণ সম্পাদক।

সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি রাষ্ট্রে প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। অতীতেও বারবার এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কিন্তু কোনবারই এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের কোন ধরনের বিচার বা শাস্তি হয়নি। তাই, কিছুদিন পরপরই মৌলবাদী, ধর্মান্ধ, সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী এমন অপকর্ম করার সুযোগ পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *