উদীচী-একবিংশ জাতীয় সম্মেলন 2019

উদীচীর একবিংশ জাতীয় সম্মেলন শুরু ২৮ মার্চ

মানুষ, তার সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের আকাক্ষার মুক্তির জন্য ভ্রান্তিহীন-ক্লান্তিহীনভাবে লড়াইয়ের আহ্বানের মধ্য দিয়ে আগামী ২৮শে মার্চ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর একবিংশ জাতীয় সম্মেলন ও সত্যেন সেন গণসঙ্গীত উৎসব শুরু হচ্ছে।

ঐদিন বিকেল তিনটায় ঢাকার মহানগর নাট্যমঞ্চে সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করবেন, দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ্ অধ্যাপক ড. অজয় রায়। দেশের ঐতিহ্যবাহী ও বৃহত্তম সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান উদীচীর তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা শহীদুল্লাহ্ চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন।

এবারের সম্মেলনের মর্মবাণী: ‘সময়ের ভ্রান্তিতে টলো না, লড়াইটা কখনোই ভুলো না’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বন্ধুপ্রতীম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন। অনুষ্ঠানসূচিতে আরও রয়েছে, জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতা ও এর ফলাফল ঘোষণা। জানুয়ারি মাসে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘রণেশ দাশগুপ্ত জাতীয় গ্রন্থপাঠ প্রতিযোগিতা’য় বিজয়ীদের মধ্যে সনদ এবং স্মারক বিতরণ এবং প্রথম ও দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় বিজয়ী দল ও একক শিল্পীদের গণসঙ্গীত পরিবেশনা, আবৃত্তি ও নৃত্যানুষ্ঠান। সম্মেলনের উদ্বোধনী ও কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের দেশ ও বিদেশের সাড়ে তিনশ’রও বেশি শাখার কয়েক হাজার পর্যবেক্ষক ও প্রতিনিধি যোগ দেবেন।

এ উপলক্ষে প্রকাশিত এক প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, আমরা পরাস্ত নাগরিক, কাঁধে ক্ষত-বিক্ষত রাষ্ট্র, অসাড় দেশ! মুখ থেকে চুয়ে পড়ছে অন্ধকারের লালা, বুক থেকে অনবরত নিঃসরিত হচ্ছে বিপন্ন স্বপ্নের হাহাকার! এ দেশ আমরা চাইনি। এখানে চিন্তার স্বাধীনতা নিহত, বাক্ স্বাধীনতা কালা-কানুনের খড়গের নিচে। বিপরীত মত ভীষণ জব্দ, প্রাণ এখানে পানির দর পেয়ে যায়, ঝাঁঝরা হয় শ্রমিকের বুক। উন্নয়নের ভ্রুকুটির কাছে জড়োসড়ো গণতন্ত্র। উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির নসিহতে নির্ধারিত হয় আমাদের দিবারাত্রী। রাষ্ট্রধর্মের বজ্জাতি গিলে খায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। এ দূর্দৈব মানুষ আনেনি, এনেছে অথর্ব শাসকেরা। এ শাসন বলয়ের বিপরীতে মানুষকে দাঁড়াতেই হবে অস্তিত্বের প্রগাঢ় প্রয়োজনে।

দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর আগে ১৯৬৮ সনের ২৯শে অক্টোবর বিপ্লবী সত্যেন সেন এর উদ্যোগে বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার অর্জন, মেহনতি মানুষের মুক্তি; ন্যায্য, সমতাভিত্তিক, মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করার লক্ষ্যে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *