সদাপ্রত্যক্ষ এই জীবনযাপনের বাইরেও তো মানুষের আরো একটি জগৎ থাকে- ভাবনার পরিমণ্ডল! এখানে কিন্তু অন্যের হাত সামান্য, এর স্বয়ম্ভু বিশ্বকর্মা সে নিজেই; ওই মানুষটি। তিনি যদি হন শিল্পী অথবা কোনো এক মহান আদর্শে বুক বেঁধে জীবনের সিঁড়ি ভেঙে সামনে এগিয়ে যাওয়া প্রত্যয়ী ধীমান- তাঁর ক্ষেত্রে এ জগৎটি আরও সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। রণেশ দাশগুপ্তর ক্ষেত্রেও ঘটেছে ঠিক এ-রকম একটা কিছু। তিনি একাধারে ছিলেন সাংবাদিক, তাত্ত্বিক-রাজনীতিক, সৎ-সংগঠক, সাহিত্যবোদ্ধা ও সমালোচক। বহুক্ষেত্র-বিচরিত মানুষ হলেও তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপের আত্মপ্রণোদনার উৎস কিন্তু চিন্তার নির্দিষ্টতা থেকে, আদর্শের নিগূঢ় অআন্তঃপ্রেরণায়। সে-অর্থে ‘সাহিত্যশিল্পী’ হয়তো তিনি নন, তবে সাহিত্য-বিবেচক নিশ্চয়। এ বিবেচনা কোনো বৃশ্চিক-বিষ্ঠাজাত নয়; নিজস্ব চিন্তনের উর্বর ভূমিতেই প্রোথিত এর মূল- রসের অমিত উৎস যেখানে দ্বান্দ্বিক বন্তুবাদী দর্শন। শুদ্ধতর অর্থে বাংলাসাহিত্যচিন্তার প্রকাশটা বঙ্কিমচন্দ্র থেকেই শুরু,- রবীন্দ্রনাথে সৌন্দর্য, মনুষ্যত্ব আর ব্যাপকতার প্রতিষ্ঠা। প্রমথ চৌধুরী-বুদ্ধদেব বসু-আবু সয়ীদ আইয়ুব প্রমুখ একে নিয়ে এলেন বিকাশশীলতার মোহনায়, ব্যক্তি-জিজ্ঞাসার অম্বুজে। এরপর এই সাহিত্যচিন্তার দিকটি বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলো আমাদের বোধে। Continue reading রণেশ দাশগুপ্তর সাহিত্য-বিষয়ক ভাবনা ও মূল্যায়ন: সৌমিত্র শেখর