বন্দর রক্ষার কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা উদীচীর

চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেয়ার প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের ডাকা যমুনা অভিমুখে মিছিল কর্মসূচিতে পুলিশের হামলা ও লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, দেশের সম্পদ রক্ষার দাবিতে আন্দোলনরতদের উপর এমন ন্যক্কারজনক হামলা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বিবৃতিতে উদীচীর নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন চট্টগ্রামের বন্দরের তিনটি টার্মিনাল দীর্ঘদিন ধরেই দেশিয় ব্যবস্থাপনায় ধারাবাহিকভাবে লাভের মুখ দেখছে। তারপরও নিউমুরিং টার্মিনালের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব একটি বিদেশি কোম্পানির কাছে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বামপন্থী সংগঠনগুলোর ধারাবাহিক আন্দোলনে শুরু থেকেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে উদীচী।

সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে মিছিল কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়। কিন্তু, মিছিলটি কাকরাইল মোড়ে যাওয়ার পরপরই বিনা উস্কানিতে অতর্কিতভাবে সেখানে হামলা চালায় পুলিশ। তাদের বেপরোয়া লাঠিচার্জে আহত হন শ্রমিক নেতা কাজী রুহুল আমিন, ছাত্র নেতা প্রিজম ফকির, শোয়েইব আহমেদ আসিফ, ইমতিয়াজ আহমেদ রাফিন, জহুর লাল রায়, অন্ত অরিন্দম, রাসেল আহমেদ, শাহিনুর আক্তার সুমি, ফাহিম আহমেদ চৌধুরী, স্বাকাই ইসলাম, রাকিব আহমেদ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ক্বাফী রতন, বাসদ নেতা সীমা দত্তসহ বেশ কয়েকজন।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে উদীচীর নেতৃবৃন্দ বলেন, গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকেই পুলিশের আচরণ পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়। কিন্তু, উল্লেখযোগ্য কোন উদ্যোগ না নেয়ার কারণেই এখনও স্বৈরাচারি আমলের মতোই শান্তিপূর্ণ ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে যাচ্ছে পুলিশ। গত ১৫ মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলা মব সন্ত্রাস দমনে পুরোপুরি ব্যর্থ হলেও বন্দর রক্ষার মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ করতে বিন্দুমাত্র পিছপা হয়নি পুলিশ। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর এমন নিপীড়নমূলক আচরণ বন্ধ না হলে, যে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতা প্রাণ দিয়েছে সেটি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূরণ হবে না বলেও মনে করেন উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

বন্দর রক্ষার কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা ও এ ঘটনার নির্দেশদাতা ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। একইসাথে, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে ইজারা দেয়ার অশুভ উদ্যোগ থেকে সরে আসার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবিও জানান উদীচীর নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.