গত কয়েক মাসে দেশে ঘটে যাওয়া একের পর এক লেখক ও প্রকাশক হত্যার ঘটনা পুরো দেশবাসীকে আতঙ্কিত করেছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচার না হওয়ায় মুক্তমনা মানুষ হতাশ হয়েছে। খর্ব করা হয়েছে জনগণের নিরাপত্তার অধিকার। এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন দেশের প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীরা। অবিলম্বে লেখক-প্রকাশকদের হত্যার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
লেখক প্রকাশক হত্যার বিচারের দাবিতে যৌথ বিবৃতি
তারিখ: ১০-১১-২০১৫
বর্তমান সময়ে সংগঠিত প্রকাশক ও লেখকদের হত্যা দেশজুড়ে আতংকের সৃষ্টি করেছে। মুক্তবুদ্ধির জাগরণকে রুদ্ধ করতে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠী একের পর এক এ ধরনের হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে পাঁচজন লেখককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলেও সরকার এখনো পর্যন্ত একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার করতে পারেনি। অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচার না করার ফলে হত্যাকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। যেসকল অপরাধীদের ধরা হয়েছে তারাও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারো তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের এরূপ উদাসীনতা মুক্তবুদ্ধির মানুষদের হতাশ করেছে। সেইসাথে জনগণের নিরাপত্তার অধিকার খর্ব করা হয়েছে। জনমনে হতাশা ও আতংকের সৃষ্টি হচ্ছে।
দেশকে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল ধারায় এগিয়ে নিতে সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের উপরই বর্তায়। সরকারের উর্ধতন মহল থেকে খুনীদের আইনের আওতায় আনার বদলে লেখকদেরকে সংযত হবার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে খুনীদের চেয়েও বেশী অপরাধী হচ্ছে লেখালেখি করা। আমরা এ অবস্থাকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারিনা।
সরকার ও তার গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতার দায়ভার জনগণ মেনে নিতে পারেনা। তাই সরকারের প্রতি দাবী জানাচ্ছি, অবিলম্বে প্রতিটি লেখক প্রকাশকদের হত্যার সাথে জড়িত দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় এনে জনমনে স্বস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা মনে করি তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সংবিধান স্বীকৃত ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে এধরণের কালাকানুন থাকতে পারে না। অবিলম্বে ৫৭ ধারা বাতিল করতে হবে।
বিবৃতি দেয়েছেন-
১. আহমেদ রফিক
২. প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
৩. কামাল লোহানী
৪. অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
৫. অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
৬. অধ্যাপক যতীন সরকার
৭. ড. অজয় রায়
৮. হাসান আজিজুল হক
৯. শুভ রহমান
১০. নিখিল সেন
১১. সৈয়দ হাসান ইমাম
১২. অধ্যাপক ড. শফিউদ্দিন আহমেদ
১৩. শাহরিয়ার কবির
১৪. রামেন্দু মজুমদার
১৫. মামুনুর রশীদ
১৬. বেগম মুশতারী শফি
১৭. ড. অনুপম সেন
১৮. অধ্যাপক মাহফুজা খানম
১৯. সেলিনা হোসেন
২০. অধ্যাপক কাজী মদিনা
২১. ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল
২২. অধ্যাপক এম এম আকাশ
২৩. অধ্যাপক আনু মুহম্মদ
২৪. আবুল মোমেন
২৫. মানবেন্দ্র বটব্যাল
২৬. অধ্যাপক আবুল বারাক আলভী
২৭. আবেদ খান
২৮. মশিউদ্দিন শাকের
২৯. লায়লা হাসান
৩০. অধ্যাপক বদিউর রহমান
৩১. অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান সেলিম
৩২. অধ্যাপক এ এন রাশেদা
৩৩. সুজেয় শ্যাম
৩৪. প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ শীশ
৩৫. মোনায়েম সরকার
৩৬. কবি এ কে শেরাম
৩৭. কবি গোলাম কিবরিয়া পিনু
৩৮. সাইদুর রহমান বয়াতি