মারো জোয়ান হেঁইও মারো কষে টান

কথা ও সুর : সত্যেন সেন

মারো জোয়ান হেঁইও মারো কষে টান
তালে তালে ফেল বৈঠা নদীতে উজান ॥

ও মাঝি হাল তোর শক্ত করে ধর
পুব আকাশে গর্জে দেয়া কিসের তাতে ডর
পথের বাধা মানবোনা রে আসুক ঝড় তুফান ॥

মাঝ নদীতে ভরা নাও কতই হল তল
সামনে পিছে নাচে মুখর কুটিল কালো জল
হও হুশিয়ার পাক্কা মাঝি মজুর আর কিষাণ ॥

ওই ওপারে স্বপ্নে দেখা জাগে সোনার কূল
মোদের লাগি ডাক পাঠালো করিসনা রে ভুল
ঘোর আঁধারে পথ দেখাবে আগুনের নিশান ॥

ডাক শুনে আজ এসেছে সব পেছনে কেউ নেই
লক্ষ হাতে হাত মিলিয়ে আমরা পাড়ি দেই
একই পথের যাত্রী মোরা জোরসে আগুয়ান ॥

আরশির সামনে একা একা দাঁড়িয়ে

কথা : আশরাফ হোসেন
সুর : সুকুমার দাস

আরশির সামনে একা একা দাঁড়িয়ে
যদি ভাবি কোটি জনতার মুখ দেখবো
হয়না হয়না হয়না
কে বলেছে হয়না, এসো এই মঞ্চে
উদীচী এমনই এক আয়না ॥

সত্যেন রণেশের আঁকা পদচিহ্ন
লাল খামে বাঙালির ঠিকানা অভিন্ন
কানাগলি রাজপথ মিশে সেই মোহনায়
অন্য পথের দিশা চাইনা ॥

প্রগতির মিছিলে এই নব মাত্রা
শুরু হোক অনিয়ম ভাঙবার যাত্রা
থেমে থাকা আর নয় এখনি সে সময়
যুদ্ধে যাবার দেরি সয়না ॥

তেরো সংখ্যা কি অশুভের প্রতীক? মযহারুল ইসলাম বাবলা

১৩ সংখ্যাকে অশুভরূপে কম-বেশী আমরা সবাই ভেবে থাকি। কেবল আমরা একা নই। বিশ্বের প্রায় দেশেই ১৩ সংখ্যাকে আন লাকি থার্টিন রূপে বিবেচনা করা হয়। পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকেই বিষয়টি আমাদের উপমহাদেশে চল হয়েছে। প্রতিটি নতুন বছরের আগমনে আমরা নানা প্রত্যাশা করে থাকি। চলতি বছর শুরুতেও আমাদের নানা প্রত্যাশা নিশ্চয় ছিল। কিন্তু বছরের দ্বিতীয় মাস হতে আমরা যা প্রত্যক্ষ করেছি-তাতে ঐ অশুভের প্রতীক রূপেই ২০১৩-কে বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছি। কাকতালীয়ভাবে হলেও ২০১৩ আমাদের জাতীয় জীবনে শুভবার্তা নিয়ে আসেনি। একমাত্র প্রত্যাশা পূরণ বা সাফল্য বলতে স্বাধীনতার দীর্ঘ বিয়াল্লিশ বছর পর হলেও ঘৃণিত কতিপয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় প্রদান জাতির কলঙ্ক মোচনের পথ উন্মুক্ত করেছে। আমাদের প্রত্যাশা পূরণে এছাড়া আর কোনো ক্ষেত্রে সাফল্যের দেখা আমরা পাই নি। Continue reading তেরো সংখ্যা কি অশুভের প্রতীক? মযহারুল ইসলাম বাবলা

রণেশ দাশগুপ্ত ও তাঁর সাংবাদিক জীবনের একটি ছায়াচিত্র: দীপংকর গৌতম

‘কেঁচোর মায়ের পুত্রশোক থাকে মাত্র একদিন। গরুর মায়ের আরেকটু বেশি। এই বেশি কম হয় শুধুমাত্র ঘিলুর তারতম্যের কারণে।’ -শম্ভু মিত্র
ঘিলুর এই তারতম্য শুধু কেঁচো এবং গরুর ক্ষেত্রে নয়Ñমানুষের বেলায়ও এ পার্থক্য ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। এ ক্ষেত্রে কারো নিদর্শন টেনে বললে ঘটনাটা তেতো হয়ে যায়। ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ নামে যে প্রবাদটি রয়েছে-এখানে সেটি প্রযোজ্য। তবে এ গীত গাওয়া হচ্ছিল সাংবাদিক-সাহিত্যিক রণেশ দাশগুপ্তের সাংবাদিক জীবন সম্বন্ধে কিছু বলার জন্য।
একটা সংবাদপত্র মানে একটা উপাসনালয়। একজন সাংবাদিক সেই উপাসনালয়ের উপাসক। ভারতীয় মিথলজিতে দেখা যায় সাপের দেবী মনসাকে চাঁদ সওদাগর উপাসনা করতে চায়নি। কিন্তু এবং একজন সাংবাদিক সত্যকে সেজদা করে। যদি সেই সাংবাদিক কোকিলের মতো ফড়িয়া না হয়, বাদুড়ের মতো জার্সি বদল না করে, একমুখে দুই কাজ না সারে। সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এটাই মূল কথা। এই সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে পেশার দেয়াল টপকে যিনি ব্রতের জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি রণেশ দাশগুপ্ত্ সাহিত্য, সাংবাদিকতা কিংবা সংস্কৃতির পাঠ-এস ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক ব্রতচারী ঋষি। রণেশ দাশগুপ্তের তুলনা দ্বিতীয় আর কাউকে দিয়ে দেয়া যাবে না। সংবাদপত্রের জগতে তিনি ছিলেন এক আদমসুরত বা দিকচিহ্ন। একজন সাংবাদিকের জীবন গঠনের জন্য রণেশ দাশগুপ্ত এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত। Continue reading রণেশ দাশগুপ্ত ও তাঁর সাংবাদিক জীবনের একটি ছায়াচিত্র: দীপংকর গৌতম

রণেশ দাশগুপ্তর সাহিত্য-বিষয়ক ভাবনা ও মূল্যায়ন: সৌমিত্র শেখর

সদাপ্রত্যক্ষ এই জীবনযাপনের বাইরেও তো মানুষের আরো একটি জগৎ থাকে- ভাবনার পরিমণ্ডল! এখানে কিন্তু অন্যের হাত সামান্য, এর স্বয়ম্ভু বিশ্বকর্মা সে নিজেই; ওই মানুষটি। তিনি যদি হন শিল্পী অথবা কোনো এক মহান আদর্শে বুক বেঁধে জীবনের সিঁড়ি ভেঙে সামনে এগিয়ে যাওয়া প্রত্যয়ী ধীমান- তাঁর ক্ষেত্রে এ জগৎটি আরও সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। রণেশ দাশগুপ্তর ক্ষেত্রেও ঘটেছে ঠিক এ-রকম একটা কিছু। তিনি একাধারে ছিলেন সাংবাদিক, তাত্ত্বিক-রাজনীতিক, সৎ-সংগঠক, সাহিত্যবোদ্ধা ও সমালোচক। বহুক্ষেত্র-বিচরিত মানুষ হলেও তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপের আত্মপ্রণোদনার উৎস কিন্তু চিন্তার নির্দিষ্টতা থেকে, আদর্শের নিগূঢ় অআন্তঃপ্রেরণায়। সে-অর্থে ‘সাহিত্যশিল্পী’ হয়তো তিনি নন, তবে সাহিত্য-বিবেচক নিশ্চয়। এ বিবেচনা কোনো বৃশ্চিক-বিষ্ঠাজাত নয়; নিজস্ব চিন্তনের উর্বর ভূমিতেই প্রোথিত এর মূল- রসের অমিত উৎস যেখানে দ্বান্দ্বিক বন্তুবাদী দর্শন। শুদ্ধতর অর্থে বাংলাসাহিত্যচিন্তার প্রকাশটা বঙ্কিমচন্দ্র থেকেই শুরু,- রবীন্দ্রনাথে সৌন্দর্য, মনুষ্যত্ব আর ব্যাপকতার প্রতিষ্ঠা। প্রমথ চৌধুরী-বুদ্ধদেব বসু-আবু সয়ীদ আইয়ুব প্রমুখ একে নিয়ে এলেন বিকাশশীলতার মোহনায়, ব্যক্তি-জিজ্ঞাসার অম্বুজে। এরপর এই সাহিত্যচিন্তার দিকটি বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলো আমাদের বোধে। Continue reading রণেশ দাশগুপ্তর সাহিত্য-বিষয়ক ভাবনা ও মূল্যায়ন: সৌমিত্র শেখর