এই নবান্নে এই হেমন্তে কাটা হবে ধান

কথা : সুকান্ত ভট্টাচার্য
সুর : শেখ লুতফর রহমান

এই নবান্নে এই হেমন্তে কাটা হবে ধান,
আবার শূন্য গোলায় ডাকবে ফসলের বান-
পোষ পার্বণে প্রাণ কোলাহলে
ভরবে গ্রামের নীরব শ্মশান।
তবুও এ হাতে কাস্তে তুলতে কান্না ঘনায়ঃ
হলকা হাওয়ায় বিগত স্মৃতিকে ভুলে থানা দায়;
গত হেমন্তে মরে গেছে ভাই ছেড়ে গেছে বোন
পথে প্রান্তরে খামারে মরেছে যত পরিজন
নিজের হাতে জমি ধান-বোনা
বৃথাই ধূলোতে ছড়িয়েছে সোনা,
কারোরই ঘরেতে ধান তোলবার
আসে নি শুভক্ষণ-
তোমার আমার ক্ষেত ফসলের অতি ঘনিষ্ঠ জন।
এবার নতুন জোরালো বাতাসে
জয়যাত্রার ধ্বনি ভেসে আসে,
পিছু মৃত্যুর ক্ষতির নির্বচন-
এই হেমন্তে ফসলেরা বলেঃ
কোথায় আপন জন ?
তারা কি কেবল লুকোনো থাকবে
অক্ষমতার গ্লানিকে ঢাকাবে।
প্রাণের বদলে যারা
প্রতিবাদ করেছে উচ্চারণ ?
এই নবান্নে প্রতারিতদের হবে না নিমন্ত্রণ ।

বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এল ঐ

কথা ও সুর : কাজী নজরুল ইসলাম

বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এল ঐ
এল ঐ রক্ত যুগান্তর রে
বল জয় সত্যের জয় আসে ভৈরব বরাভয়
শোন অভয় ঐ রথ ঘর ঘর রে ॥

রে বধির শোন পেতে কান
ওঠে ঐ কোন মহা গান
হাঁকছে বিষাণ ডাকছে ভগবান রে ।
জগতে লাগলো সাড়া জেগে ওঠ উঠে দাঁড়া
ভাঙ পাহারা মায়ার কারা ঘর রে।
যা আছে যাক না চুলায় নেমে পড় পথের ধূলায়
নিশান দোলায় ঐ প্রলয়ের ঝড় রে ॥

সে ঝড়ের ঝাপটা লেগে ভীমাবেগে উঠুক জেগে
পাষাণ ভেঙে প্রাণঝরা নির্ঝর রে।
ভুলেছি পর ও আপন ছিঁড়েছি ঘরের বাঁধন
স্বদেশ স্বজন স্বদেশ মোদের ঘর রে
যারা ভাই বদ্ধ কুয়ায় খেয়ে মার জীবন গোঁয়ায়
তাদের শোনাই প্রাণজাগা মন্তর রে ॥

বর্ষা ও বাঙালি :প্রদীপ ঘোষ

সমুদ্র আর পাহাড়ের, সবুজ সমতলের জমাট বাধা পলির বুকে কবে কোন কালে হেঁটেছিলো আদি মানবেরা। নাতিশীতোষ্ণ জলহাওয়ায় সবুজের বুকে ফলিয়েছিলো শস্যদানা। সেই সকল আদিমানবেরা একটু একটু করে প্রকৃতিকে সাজিয়েছে নিজের মত করে, গড়ে তুলেছিলো প্রকৃতিক সংস্কৃতি। বলছি সেই সকল মানুষদের কথা যারা এ জনপদের প্রকৃতিক সংস্কৃতি বিনির্মাণ করেছিলো। কালক্রমে একে একে বাইরে থেকে এলো নানা রক্তের ধারা। কখনো আদি অষ্ট্রিক, মঙ্গলীয় জনধারা, ইন্দো আর্য, পারস্য শক, পাঠান মোঘল সহ নানা জাতি। এই বিচিত্র মেলামেশার ফলে কালক্রমে বাঙ্গালির নিজস্ব এক গড়ন আমরা পেয়েছি। সেই সাথে পেয়েছি চাষাবাদের মত কৃষি সভ্যতা। ষড় ঋতুর অপার স্নেহে এই কৃষিই আমাদের দিয়েছে উর্বর এক সংস্কৃতি যার নাম বাঙ্গালি সংকৃতি। Continue reading বর্ষা ও বাঙালি :প্রদীপ ঘোষ

দিল ডাক রক্তে রক্তে তপ্ত ফাল্গুন

কথা : মো. রফিকুজ্জামান
সুর : সুজেয় শ্যাম

দিল ডাক রক্তে রক্তে তপ্ত ফাল্গুন
অযুত দুর্জয় প্রাণ দীপ্ত আবেগ নিয়ে দুলছে
অযুত দুর্জয় সাগর জোয়ার হয়ে ফুলছে ॥

জ্বলছে ফাগুন আগুন হয়ে আজ পথে পথে
জ্বলছে ফাগুন দারুণ রোষে আজ জনমতে
বঞ্চিত বুকের হাজার বছরের ক্ষোভ
শৃঙ্খল বন্ধন খুলছে ॥

মিলছে আজ সবার ক্ষুদ্ধ হাত হাতে হাতে
মিলছে এবার সবার কণ্ঠধ্বনি প্রতিবাদে
ঝঞ্জার বেগে উড়িয়ে আঁধারের রাত
নিদ্রিত সূর্যকে তুলছে ॥

১৮৮৬’র পহেলা মে শিকাগোর হে মার্কেটে

১৮৮৬’র পহেলা মে শিকাগোর হে মার্কেটে
শ্রমিকের তাজা খুনে ভেসে গেল খোলা রাজপথ
প্রথম শহীদ হলো মজুর……….

লাল সালাম লাল সালাম
রক্তে ধোওয়া মে তোমায় সালাম ॥

নিপীড়িত জনতার প্রথম ভাঙালো ওরা ঘুম
বিপ্লবী মজুরের হাতে দিল খোলা তলোয়ার
ওরা শিকাগোর মেহনতি মজদুর
ওরা মজদুর দুনিয়ার সাক্ষ্য
ওরা সত্য ওরা ধন্য, ওরা বিপ্লবী পৃথিবীর মন্ত্র।

লং লিভ রেভুলিউশন, লং লিভ লং লিভ
লং লিভ রেভুলিউশন, লং লিভ লং লিভ ॥

শোষকের শৃঙ্খলে প্রথম দিয়েছে ওরা টান
মালিকের মুনাফায় প্রথম হেনেছে পদাঘাত
ওরা পৃথিবীর মেহনতি মজদুর
ওরা মজদুর দুনিয়ার সূর্য
ওরা সত্য ওরা ধন্য, ওরা বিপ্লবী পৃথিবীর মন্ত্র।

লং লিভ রেভুলিউশন, লং লিভ লং লিভ
লং লিভ রেভুলিউশন, লং লিভ লং লিভ ॥