রণেশ দাশগুপ্তের চিন্তার দিগন্ত: যতীন সরকার

এক
পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝিতে যখন আমি কলেজের ছাত্র, তখন থেকেই রণেশদাশগুপ্তের লেখার সঙ্গে আমার পরিচয়। কঠিন কঠিন লেখার অনেক কিছুই তখন বুঝতাম না যদিও, তবু তাঁর লেখা আমাকে ভীষণভাবে টানত। বারবার পড়তাম। পড়তে পড়তেই কঠিনের প্রতি একটা ভালোলাগা জন্মে গিয়েছিল। কঠিন লেখার এই লেখকটিকে দেখবার ও তাঁর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছে জেগেছিল তখনই। কিন্তু সে-ইচ্ছা পূরণ হতে লেগেছিল দীর্ঘদিন। একে তো আমি একজন মফস্বলবাসী নিরীহ ছাত্র- ঢাকায় গিয়ে এত বড় মাপের একজন মানুষের সঙ্গে দেখা করার মতো সাহসই সঞ্চয় করে উঠতে পারিনি- তার উপর ওই মানুষটির দেখা পাওয়াও তখন খুব সহজ ছিল না। কারণ, কারা প্রাচীরের বাইরে খোলা হওয়ায় তিনি খুব কম সময়ের জন্যই অবস্থান করতে পারতেন।
তার সঙ্গে আমার প্রথম প্রত্যক্ষ পরিচয় হয় আটষট্টিতে। Continue reading রণেশ দাশগুপ্তের চিন্তার দিগন্ত: যতীন সরকার

সত্যেনদার সান্নিধ্যের দিনগুলি:অসীম সাহা

সত্যেন সেনের সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ পরিচয় হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। খ্যাতিমান লেখক ও বুদ্ধিজীবী আহমদ ছফাই প্রথমে তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। আমি তখন বাংলাবাজারে নিয়মিত যাই। সেখানে সত্যেন সেনের রাজনৈতিক শিষ্য আবদুল আলিমের একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ছিল ‘কালি-কলম প্রকাশনী’ নামে। ৩৪ বাংলাবাজারে। তার ছোট ভাই আবদুল মালেক সেটা চালাতেন। বাংলাবাজার ঢোকার মুখে পোস্টাফিসের পাশে তার একটি রেস্তোরাঁও ছিল।
সত্যেনদা ‘কালি-কলম’-এ নিয়মিত আসতেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম প্রত্যক্ষ পরিচয় হয়। এর আগে সত্যেনদাকে আমি প্রথম দেখি ১৯৬৭ সালে দৈনিক সংবাদ অফিসে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর প্রথম একা একা ঢাকায় আসি। উদ্দেশ্য, সংবাদের খেলাঘর আসরের পাতার দায়িত্বে থাকা ভাইয়া অর্থাৎ পরবর্তীকালে দৈনিক সংবাদের সম্পাদক বজলুর রহমান এবং দৈনিক পয়গাম পত্রিকার ‘নওনেহালের আসর’-এর দায়িত্বে থাকা মিতা ভাই অর্থাৎ বিখ্যাত ছড়াকার রফিকুল হকের সঙ্গে দেখা করা। ২৬৩ বংশাল রোড। যেখানে রংমহল সিনেমা হলটি ছিল, তার উল্টোদিকেই একটি পুরনো দোতলা দালানে ছিল সংবাদের অফিস। ওই দালানের দোতলার উত্তরপাশে ছিল খেলাঘর আসরের কর্মীদের জন্য বরাদ্দৃকত একটি কক্ষ। পশ্চিমপাশে ছিল সংবাদের সহকারী সম্পাদকদের বসবার ঘর। আমি যেদিন প্রথম সংবাদ অফিসে খেলাঘরের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাই, তখন ওখানে উপস্থিত ছিল সে-সময়ের বিখ্যাত ছড়াকার আখতার হুসেন, খেলাঘর আসরের প্রধানতম কর্মী কবি বেলাল চৌধুরীর ভাই জিয়াউদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকে। এদের সকলের সঙ্গেই পরিচয় খেলাঘরের পাতায় আমার নিয়মিত লেখার মাধ্যমে। Continue reading সত্যেনদার সান্নিধ্যের দিনগুলি:অসীম সাহা

রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী: তরুণ প্রাণের সন্ধান: অমিত রঞ্জন দে

বাংলার মানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং সুকান্ত চির জাগরুক থাকবে। এ তিন কবি বাংলা সাহিত্যে কেবল ঐতিহ্য হিসেবে নয়, ভবিষ্যতের পথ প্রদর্শক হিসেবেও বরণীয়। এদের একজন উদার মানবিকতাবাদের কবি, আরেকজন মেহনতী মানুষের মুক্তিতে বিশ্বাসী স্বাধীনতা ও জাতীয় গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কবি। অন্যজন সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতার আদর্শে সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবে বিশ্বাসী কবি। বলা চলে একই উজানে চলা নৌকার হাল ধরে থাকা তিন কা-ারী। রবীন্দ্রনাথ যে কবির জন্য কান পেতে ছিলেন এবং নজরুল যার আগমন আকাক্সক্ষায় প্রহর গুনেছেন সুকান্তই সেই কবি প্রতিভা। তিনজনের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ আবির্ভূত হয়েছেন সবার আগে। তিনি তার সমগ্র রচনা শৈলীর মধ্য দিয়ে বাঙালির ধমনি তথা রক্ত কণিকায় চেতনার বীজ বপন করেছেন। যে কারণে যে কোন সংকটে-সম্ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ আমাদের সামনে এসে দাঁড়ান। Continue reading রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী: তরুণ প্রাণের সন্ধান: অমিত রঞ্জন দে

উদীচীর ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ: আখতার হুসেন

১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে জন্ম হয়েছিল উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর। সেই হিসেবে আজ উদীচীর ৪৬তম জন্মদিন, ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

উদীচীর ভ্রুণের  সঞ্চার হয়েছিল ৩৬ নারিন্দা লেনের এক মেস বাড়ির চিলতে একটা ঘরে। পাশের ঘরেই থাকতেন ‘প্রেস শ্রমিকের জারি’ নামের পালাগান লিখে বিখ্যাত হওয়া প্রেস শ্রমিক নেতা সাইদুল ইসলাম। সস্ত্রীক থাকতেন তিনি।
এই মেসের ঘরেই ১৯৬৭ সালের একদিন বিকেলের দিকে এসে হাজির সাংবাদিক-সাহিত্যিক সত্যেন সেন। সঙ্গে গোলাম মোহাম্মদ (ইদু ভাই), মোস্তফা ওয়াহিদ খান, বদরুল আহসান খান, রিজিয়া খাতুন, আদমজির গায়ক-শ্রমিক নেতা আবদুল খালেক। আরও কেউ ছিলেন কী-না, এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না। তবে আমাদের রুমেই যে উদীচীর প্রথম দিনের গানের রিহার্সাল হয়েছিল, সে কথা মনে আছে। আমরাও সেদিন গানে গলা মিলিয়েছিলাম। সত্যেন দার লেখা ও তাঁরই সুরারোপিত ‘ওরে বঞ্চিত সবহারা দল’ গানটি দিয়েই শুরু হয়েছিল উদীচীর ভবিষ্যৎ যাত্রা। Continue reading উদীচীর ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ: আখতার হুসেন

উদীচী : বিপ্লবী ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার উদীচী প্রতিষ্ঠার পটভূমি

উদীচী : বিপ্লবী ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার
উদীচী প্রতিষ্ঠার পটভূমি
১৯১৭ সালে সোভিয়েত বিপ্লবের বিজয়ের পর বিশ্ববাসী নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে শোষণমুক্তির। বুঝতে শুরু করে  পুঁজির শৃঙ্খল তাহলে শেষ কথা নয়। নতুন যুগের ভোরে বিশ্ববাসী জেগে উঠতে শুরু করে। শামিল হয় জাগরণের মিছিলে। Continue reading উদীচী : বিপ্লবী ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার উদীচী প্রতিষ্ঠার পটভূমি