শুরু হয়েছে মহান বিজয়ের মাস। মহান বিজয়ের মাসের প্রথম দিন আলোর মিছিল ও প্রদীপ প্রজ্জ্বালন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।

০১ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শিখা চিরন্তনে গিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এ তিনটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত বিভিন্ন গণসঙ্গীত সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। দেয়া হয় নানা দাবি সম্বলিত শ্লোগান।
শিখা চিরন্তনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। এতে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ কমিউনিস্ট পার্টি ছাত্র ইউনিয়ন যৌথ গেরিলা বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল-এ-এলাহী মশগুল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা. ফজলুর রহমান, সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবির সাবেক সহকারি সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। পরে, উপস্থিত সবাইকে শপথবাক্য পাঠ করান উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম ও লাখো শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের এই মাসেই ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে মহান বিজয় অর্থাৎ স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ। পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে নতুন দেশ, বাংলাদেশের। কিন্তু, মহান বিজয়ের ৫৪ বছর পরও এদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি মহান জনযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে নতুন করে চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। বাহাত্তরের সংবিধানসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে দেয়ার সব অপচেষ্টা দেশপ্রেমিক জনগণকে সাথে নিয়ে রুখে দেয়া হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোন সাম্প্রদায়িক বা মৌলবাদী রাষ্ট্র না এমন মন্তব্য করে তারা বলেন, যতদিন পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এদেশের প্রগতিশীল সব সংগঠন এবং দেশপ্রেমিক জনগণের লড়াই অব্যাহত থাকবে।
