সত্যেন সেনের সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ পরিচয় হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। খ্যাতিমান লেখক ও বুদ্ধিজীবী আহমদ ছফাই প্রথমে তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। আমি তখন বাংলাবাজারে নিয়মিত যাই। সেখানে সত্যেন সেনের রাজনৈতিক শিষ্য আবদুল আলিমের একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ছিল ‘কালি-কলম প্রকাশনী’ নামে। ৩৪ বাংলাবাজারে। তার ছোট ভাই আবদুল মালেক সেটা চালাতেন। বাংলাবাজার ঢোকার মুখে পোস্টাফিসের পাশে তার একটি রেস্তোরাঁও ছিল।
সত্যেনদা ‘কালি-কলম’-এ নিয়মিত আসতেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম প্রত্যক্ষ পরিচয় হয়। এর আগে সত্যেনদাকে আমি প্রথম দেখি ১৯৬৭ সালে দৈনিক সংবাদ অফিসে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর প্রথম একা একা ঢাকায় আসি। উদ্দেশ্য, সংবাদের খেলাঘর আসরের পাতার দায়িত্বে থাকা ভাইয়া অর্থাৎ পরবর্তীকালে দৈনিক সংবাদের সম্পাদক বজলুর রহমান এবং দৈনিক পয়গাম পত্রিকার ‘নওনেহালের আসর’-এর দায়িত্বে থাকা মিতা ভাই অর্থাৎ বিখ্যাত ছড়াকার রফিকুল হকের সঙ্গে দেখা করা। ২৬৩ বংশাল রোড। যেখানে রংমহল সিনেমা হলটি ছিল, তার উল্টোদিকেই একটি পুরনো দোতলা দালানে ছিল সংবাদের অফিস। ওই দালানের দোতলার উত্তরপাশে ছিল খেলাঘর আসরের কর্মীদের জন্য বরাদ্দৃকত একটি কক্ষ। পশ্চিমপাশে ছিল সংবাদের সহকারী সম্পাদকদের বসবার ঘর। আমি যেদিন প্রথম সংবাদ অফিসে খেলাঘরের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাই, তখন ওখানে উপস্থিত ছিল সে-সময়ের বিখ্যাত ছড়াকার আখতার হুসেন, খেলাঘর আসরের প্রধানতম কর্মী কবি বেলাল চৌধুরীর ভাই জিয়াউদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকে। এদের সকলের সঙ্গেই পরিচয় খেলাঘরের পাতায় আমার নিয়মিত লেখার মাধ্যমে। আখতার হুসেন ও জিয়াউদ্দিনই পরিচয় হবার পর আমাকে সংবাদের অফিস ঘুরিয়ে দেখাবার এক পর্যায়ে সহকারী সম্পাদকদের কক্ষের পাশ দিয়ে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পাই দুজন মানুষ মাথা নিচু করে লিখছেন। ওরা দুজন জানালো, এঁদের একজন রণেশ দাশগুপ্ত, আরেকজন শহীদুল্লাহ কায়সার। দুজনকেই আগে থেকে চিনতাম তাঁদের লেখার মাধ্যমে। দেখতে দেখতে আর একজন মানুষ সেখানে হাজির হলেন। জানলাম, তিনি সত্যেন সেন। গায়ে পাঞ্জাবির মতো দীর্ঘ একটি ফুল শার্ট, পরনে পায়জামা। হালকা-পাতলা গড়ন। সত্যেন সেনকে এই প্রথম কাছে থেকে দেখলাম। আমি বিস্মিত দুচোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। তিনি কক্ষে ঢুকে মাঝখানের চেয়ারটিতে বসলেন। দেখে মনে হলো, বেশ গুরুগম্ভীর ধরনের মানুষ। তাঁর সম্পর্কে আগে থেকেই জানতাম, কিছু কিছু লেখাও পড়েছি। কিন্তু এই প্রথম চাক্ষুষ করলাম। ইচ্ছে হলো পরিচয় করে আসি। কিন্তু সাহস হলো না।
এরপর আমি আমার শহরে ফিরে যাওয়ার পর অনেকদিন তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। ১৯৬৯ সালে স্থায়ীভাবে ঢাকায় চলে আসার পর প্রায় প্রতিদিন ‘খেলাঘর’-এ যাওয়া শুরু হলো। সময়-অসময়ে। কিন্তু বেশিরভাগ সময় বিকেলের দিকেই যাওয়া হতো। কারণ সে-সময়েই খেলাঘরের সাংগঠনিক কাজটা বেশি হতো। তাই বিকেলের দিকে সত্যেনদার সঙ্গে খুব একট দেখা হতো না। যত সময় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, সেটা দুপুরের দিকেই। সংবাদ অফিসে যতবার তাঁকে দেখেছি, নিরব সমুদ্রের ততধিক নিরব কল্লোল দেখেই তৃপ্ত থাকতে হয়েছে।
বাংলাবাজারের পরিচয়পর্ব আমাদের মধ্যে তেমন ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতে পারেনি। ঘনিষ্ঠতা হয়, যখন আহমদ ছফা তাঁর আবাসস্থলে নিয়ে গিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন। সত্যেনদা থাকতেন সংবাদপত্র কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল করিমের বাসায় পেইং গেস্ট হিসেবে। করিম সাহেবও বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার স্ত্রী হেলেন সর্বক্ষণ মাতৃসুলভ আচরণে সত্যেনদার সেবা করতেন। নিজের সন্তান ও স্বামীকে সময় দিয়ে আর একজন বাড়তি লোকের দায়িত্ব পালন করা সত্যি কঠিন ছিল। কিন্তু হেলেন তা হাসিমুখে দিনের পর দিন করে গেছেন। তার মুখের হাসিটি আমি কখনও ম্লান হতে দেখিনি। তো, সেই বাসাতেই সত্যেনদার একেবারে ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে গিয়ে নতুন করে আমার পরিচয়পর্ব সম্পন্ন হলো। একেবারে সাদামাটা একজন মানুষ। গায়ে ফুল শার্ট আর পরনে লুঙ্গি। সোফায় বসে ছিলেন। আমি আর ছফা ভাই তাঁর পাশে গিয়ে বসলাম। সাধারণ কুশলাদি জিজ্ঞেস করার পর তিনি একের পর এক ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ঘুরে এসে নিজের লেখালেখির কথাও বললেন। আমি বিমুগ্ধ বিস্ময়ে তাঁর কথা শুনতে লাগলাম। গিয়েছিলাম দুপুরে, ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। তখন আমি জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র। ছফা ভাই থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসে। চলে আসবার আগে সত্যেনদা বললেন, ‘আবার এসো’।
এরপর থেকে কতবার যে একা একাই সত্যেনদার বাসায় গেছি, গণনা করে বলা মুশকিল। অনেক সময় তাঁর সঙ্গে বাংলাবাজারেও যেতে হয়েছে। চোখে সমস্যা ছিল। ভালমতো দেখতে পেতেন না। তাই কোনও একজনকে সঙ্গী হতে হতো। আমি সাদরে সত্যেনদাকে সঙ্গ দিতাম। তখন তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক। তার পাপের সন্তান, অভিশপ্ত নগরী, মহাবিদ্রোহের কাহিনী, পদচিহ্ন, কুমারজীব, মসলার যুদ্ধ, বিদ্রোহী কৈবর্ত, পুরুষমেধ, আলবেরুণী, মা, অপরাজেয়, রুদ্ধদ্বা, মুক্তপ্রাণ প্রভৃতি বিখ্যাত গ্রন্থ প্রকাশিত হয়ে গেছে। আর তখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করছেন সত্যেনদা। তাই বাংলাবাজারে গেলে তাঁকে নিয়ে প্রকাশকদের মধ্যে রীতিমতো কাড়াকাড়ি পড়ে যেতো। তখন এখনকার মতো এত প্রকাশক ছিল না। বনেদি প্রকাশকদের মধ্যে নওরোজ কিতাবিস্তান, স্টুডেন্ট ওয়েজ, মাওলা ব্রাদার্স, প্রকাশভবন, আইডিয়াল লাইব্রেরী, আদিল ব্রাদার্স, কালিকলম প্রকাশনী, খান ব্রাদার্সই ছিল নামকরা। এইসব প্রকাশকের আগ্রহের কারণেই তাঁকে প্রায় প্রতিটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে বসে যেতে হতো। তবে সবচেয়ে বেশি সময় দিতেন কালিকলমের আলিম ভাইয়ের প্রকাশনায়। সত্যেনদা তখন আলিম ভাইকে নিয়ে নতুন ধরনের কিছু প্রকাশনার কথা চিন্তা করছিলেন। সেটা নিয়েই আলাপ-আলোচনা চলতো। মাঝে মাঝে কমিউনিস্টদের কি করা উচিত, সে-সম্পর্কেও পরামর্শ দিতেন।
এরপরই কালিকলম প্রকাশনী থেকে একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকা বের করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পত্রিকাটির নাম দেয়া হয় ‘স্বদেশ’। আহমদ ছফা সম্পাদক। সহকারী সম্পাদক হিসেবে ছিলাম আমি এবং মুনতাসীর। আজকের ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন তখন শুধু মুনতাসীর নামেই লিখতেন। সম্পাদকম-লীতে সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, আহমদ শরীফ, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর এমনকি তরুণ কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার নামও ছিল।
পত্রিকাটি নিয়ে সত্যেনদার গভীর আগ্রহ ছিল। তাঁর পরামর্শে আহমদ ছফা পত্রিকাটিকে সর্বাঙ্গসুন্দর করার চেষ্টা করেছিলেন এবং তাতে সফলও হয়েছিলেন। মুনতাসীর তেমন একটা সময় দিতে পারতেন না। মূলত আমি আর ছফা ভাইই পত্রিকাটি নিয়ে প্রচুর শ্রম দিতাম। ‘স্বদেশ’-এর পর পর তিনটি সংখ্যা বেরিয়েছিল। এ সময়েই সত্যেনদার মাথায় নতুন ধরনের একটি পরিকল্পনা আসে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, দেশের খ্যাতিমান লেখকদের দিয়ে বৃদ্ধিবৃত্তিভিত্তিক এক ফর্মার একটি করে বই প্রকাশ করবেন। সিরিজ আকারে এসব বই বের করবেন বলে সিরিজটির নাম দেয়া হয় ‘বোধনা গ্রন্থমালা’।
কিন্তু এই সিরিজের কোনও বই বের হবার আগেই ‘স্বদেশ’ পত্রিকা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। পত্রিকাটিতে প্রচৃর বিজ্ঞাপন পাওয়া যেতো। কিন্তু বিজ্ঞাপনের সব টাকা ক্যাশে জমা হতো না বলে পত্রিকাটি বের করার পথে অন্তরায় সৃষ্টি হয়। প্রকাশক হিসেবে আলিম ভাই হতাশা প্রকাশ করেন। সত্যেনদাকে সে-হতাশার কথা জানালে তিনি পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে ছফা ভাইয়ের সঙ্গে সত্যেনদার মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। সেই মনোমালিন্য তিনি স্থায়ীভাবে শান্তিনিকেতনে চলে যাবার আগ পর্যন্তও দূর হয়নি। কিন্তু এই মনোমালিন্য সত্যেনদার সঙ্গে আমার সম্পর্কে কোনও ফাটল ধরাতে পারেনি। ছফা ভাই চাইতেন না, আমি তাঁর ওখানে যাই। কিন্তু ততদিনে কবি হিসেবে আমার একটা স্বতন্ত্র পরিচয় সৃষ্টি হয়েছে। তাই প্রথমদিকে আহমদ ছফার সকল কথাকেই বেদবাক্যজ্ঞানে মেনে নিতে আমার কোনও দ্বিধা ছিল না। কিন্তু তার এই চাওয়াটি মেনে নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব হলো না। সত্যেনদার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা আরও গভীর হলো। তাঁর বাসাতে আমার যাতায়াতও বেড়ে গেল। সকালে-দুপুরে-রাতে। সত্যেনদা একটুও বিরক্ত হন না, বরং খুশিমনে আমাকে গ্রহণ করেন। পুরনোদিনের গল্প বলেন, তার জেলে বন্দি থাকার কথা, বিপ্লবী বন্ধুদের কথা কিংবা তাঁর লেখালেখির কথা। আমি কোনও কথা বলি না। শুধু মাঝে মাঝে কৌতূহল নিয়ে কিছু কিছু প্রশ্ন করি। খুব মৃদুস্বরে ধীরে ধীরে তিনি সব প্রশ্নের উত্তর দেন। সত্যেনদা সবসময়ই খুব মৃদুভাষী। খুব ধীরে মেপে মেপে কথা বলেন। আমি কোনদিন তাঁকে উত্তজিত হতে দেখিনি। কারো সম্পর্কে কোনও কটু কথাও বলতে শুনিনি। কেউ যদি তাঁর সম্পর্কে কোনও বিরূপ মন্তব্য করেছে শুনতেন, তিনি সে-সম্পর্কে কিছু না বলে ক্ষীণ হাসতেন। বলতে গেলে অজাত্রশত্রু এই মানুষটি ছিলেন প্রকৃতপক্ষেই জনমানুষের বিপ্লবী চেতনার প্রতীক। মানুষকে নিয়েই ছিল তাঁর কাজ। জীবন নির্বাহের জন্য সংবাদে চাকরি করে যে বেতন পেতেন, তা থেকে নিজের জন্য সামান্য টাকা রেখে বাকিটা বামপন্থী কর্মীদের মধ্য বিলিয়ে দিতেন। বরিশালের বিখ্যাত বামপন্থী নেত্রী মনোরমা মাসিমাকেও নিয়মিত টাকা দিতেন তিনি। এই মনোরমা মাসিমার সঙ্গে তিনিই আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। মাসিমা বরিশালেই থাকতেন। মাঝে মাঝে ঢাকায় আসতেন। আমার সঙ্গে বার তিনেক দেখা হয়েছে। মাটির মানুষ। সেই মানুষটির যাতে কোনও কষ্ট না হয়, তার জন্যে সত্যেনদার উদ্বেগের অন্ত ছিল না। দরিদ্র মানুষদের নিয়ে তিনি এতো ভাবতেন যে, তাঁর লেখার সর্বত্র তার প্রতিফলন কারও নজর এড়বার কথা নয়।
কিন্তু তাঁর মধ্যে একাকিত্বের একটা নিবিড় কষ্ট আমার দৃষ্টি এড়ায়নি। যখন হেলেন তার ছেলেকে স্কুলে দেবার জন্য বাইরে যেতেন, তখন শূন্য ঘরে একটা চেয়ারের ওপর বসে তিনি একাকী ম্লান দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকতেন। সে-সময়ে আমি গেলে তিনি গেইটের দরোজা খুলে দিয়ে যখন ফের চেয়ারে বসতেন, তখন কখনও কখনও আমি তাঁর দীর্ঘশ্বাস শুনেছি। অনেকক্ষণ আমি কথা বলতে পারিনি। বিপ্লবী তিনি। তাই অকৃতদারের জীবন বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু বয়স যত বাড়ছিল, দৃষ্টিশক্তি যত কমে আসছিল, ততোই একটা শূন্যতা তাঁকে ঘিরে ধরছিল। সেই সময়ে তাঁর পাশে কেউ ছিল না। না পরিচিতজন, না সেইভাবে পার্টি। তা উদাসীনতার একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। তখন সত্যেনদার ভেতর যে অসহায়ত্বের কষ্ট লক্ষ করেছিলাম, তা আমাকেও স্পর্শ করেছিল।
পার্টি তাঁর মতো একজন বিপ্লবীর দায় নিতে চায়নি। যেমন চায়নি রণেশ দাশগুপ্তর দায় নিতে। সে-কারণেই তাঁদের দুজনের একজনকে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ভাইয়ের কাছে, আর একজনকে কোলকাতায় প্রিয়-পরিজন কিংবা আত্মীয়-স্বজনহীন একটি গলির নিভৃত কুঠিরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকতে হয়েছে। রণেশদার সঙ্গে আমার আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু শান্তিনিকেতনে চলে যাওয়ার পরও সত্যেনদার সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তিনি আমাকে বেশ কটি নির্দেশনামূলক চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, বাড়ি বদলের সময় তাঁর সেই মূল্যবান চিঠিগুলো কোথায় যে হারিয়ে যায়! সে-জন্যে আজও আমি এক ধরনের অপরাধবোধে ভুগি।
আমার জীবনের আদর্শগত বাক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সত্যেনদার প্রভাবকে আমি অস্বীকার করতে পারব না। প্রতিমুহূর্ত তিনি আমাকে যে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা আমার চলার পথকে মসৃণ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমার কাছে সত্যেন সেন ছিলেন আদর্শের প্রতীক। সেই প্রতীকের কিছুটাও যদি মর্মে ধারণ করে থাকতে পারি, তা হলেও মনে করবো, আমি সঠিক পথে আছি। সেটাই আমার জীবনে সত্যেন সেনের ভূমিকাকে দীর্ঘস্থায়ী করে রাখবে।
১৪. ০৩. ২০১৪