বিশিষ্ট দার্শনিক, প্রবন্ধকার, সাহিত্যিক, প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ সরদার ফজলুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক শোক বার্তায় উদীচী’র কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী বলেন, সারাজীবন সমাজতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী সরদার ফজলুল করিম দর্শন শাস্ত্রে অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন। শুধু দর্শনই নয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও নিজের অসামান্য মেধার পরিচয় দিয়ে জাতিকে ঋদ্ধ করে গেছেন তিনি। তাঁর প্রয়ানে জাতি একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো বলেও মন্তব্য করেন কামাল লোহানী। শোক বার্তায় উদীচী’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে সবসময়ই অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন সরদার ফজলুল করিম। বহু বছরের শিক্ষকতা জীবনে অসংখ্য ছাত্র তৈরি করেছেন তিনি, যারা সমাজের নানা ক্ষেত্রে নিজ দক্ষতার পরিচয় রেখে চলেছেন। সরদার ফজলুল করিমের জীবনাদর্শ অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী সমাজ গঠনে এগিয়ে আসার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহবান জানান প্রবীর সরদার।
১৯২৫ সালে বরিশালে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া সরদার ফজলুল করিম পাকিস্তান শাসনামলের পুরো ২৪ বছর যুক্ত ছিলেন স্বাধীনতা, স্বাধিকার আদায়ের লড়াইয়ে। বহুবার জেল খেটেছেন, জেলে থাকা অবস্থায়ই লিখেছেন অমূল্য সব বই। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা লাভের আগে থেকেই তিনি বাংলা একাডেমির সাথে যুক্ত ছিলেন। সেসময় পাকিস্তানি বাহিনী তাকে আটক করলেও ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসে কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৪২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে ইংরেজী বিভাগে ভর্তি হলেও পরবর্তিতে তিনি দর্শন বিভাগে ট্রান্সফার হন। মাত্র ২১ বছর বয়সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার পদে যোগ দেয়ার পর থেকেই তিনি মানুষ গড়ার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেন।
বিশিষ্ট দার্শনিক, প্রবন্ধকার, সাহিত্যিক, প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ সরদার ফজলুল করিমের মৃত্যুতে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।