একুশে পদকপ্রাপ্ত নব বসন্ত খ্যাত কবি আবুল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক শোক বার্তায় উদীচী’র কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী বলেন, চল্লিশের দশক থেকে শুরু করে পরবর্তী কয়েক দশকে তাঁর অনবদ্য সৃষ্টিশীলতা দিয়ে বাংলা সাহিত্যে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন প্রখ্যাত কবি আবুল হোসেন। তাঁর লেখনীর মাধ্যমে তিনি বাংলা কবিতায় এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। এজন্য তাঁকে বাংলা কবিতার আধুনিক ধারার পথিকৃৎ রূপে আখ্যায়িত করা হয়। শোক বার্তায় উদীচী’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, ‘নব বসন্ত’, ‘বিরস সংলাপ’, ‘এখনও সময় আছে’ প্রভৃতি অনবদ্য কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা আবুল হোসেনের মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য জগতে এক শুন্যতার সৃষ্টি হলো। শুধু নিজের মৌলিক কবিতাই নয়, ইকবালের কবিতার অনবদ্য অনুবাদের মাধ্যমেও তিনি বাংলার কবিতাপ্রেমীদের পিপাসা মিটিয়েছেন। কবি আবুল হোসেন তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমেই আজীবন বেঁচে থাকবেন বলেও মন্তব্য করেন প্রবীর সরদার।
১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট খুলনার ফকিরহাটে জন্ম নেয়া আবুল হোসেন অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে সরকারি চাকুরিতে যোগ দেন। যুগ্মসচিব হিসেবে অবসরে গেলেও চাকুরির দায়িত্ব পালনের ফাঁকে ফাঁকেই তিনি সাহিত্য চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। বাংলা কবিতায় সম্পূর্ণ নতুন ধারা সৃষ্টি এবং সাহিত্য জগতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমী পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সান্নিধ্য পাওয়ার বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী বাংলাদেশের অল্প কয়েকজন কবির মধ্যে তিনি একজন। দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরণের রোগে ভুগে গত ২৯ জুন রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯২ বছর বয়সে কবি আবুল হোসেন মারা যান। এই বিশিষ্ট কবির মৃত্যুতে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।