আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ নামে একটি অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। একসাথে তিন লাখ মানুষের অংশগ্রহণে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সরকারের আমন্ত্রণে অংশ নেয়ার সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছিল ‘একুশে পদক’প্রাপ্ত দেশের অন্যতম বৃহৎ সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। কিন্তু অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য দু’দিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধী সংগঠন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে বিরোধীতাকারী জামায়াতে ইসলামীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে তিন কোটি টাকা অনুদান নেন, যার সংবাদ দেশের প্রধান প্রধান গণমাধ্যমগুলোতে ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে এ বিষয়ে তীব্র সমালোচনার পর সরকারের পক্ষ থেকে একজন মন্ত্রী ১৮ মার্চ’২০১৪ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে অনুদান নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। অথচ একই দিন মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে সরকারের আরেক মন্ত্রী ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়নে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া উচিত নয় মন্তব্য করে টাকা ফেরত দেয়ার আহবান জানান, যা প্রকারান্তরে সরকার যে অনুদান নিয়েছে সে সত্যটিকেই প্রতিষ্ঠিত করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সরকারকে তিন কোটি টাকা দেয়ার বিষয়টি আবারো নিশ্চিত করে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সব মিলিয়ে, ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সরকার যে জামায়াতী পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এ বিষয়ে নিঃসন্দেহ হয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ আর নিন্দা জানাচ্ছে উদীচী। একইসাথে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে এর অংশগ্রহণকারীদের তালিকা থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকের অনুদান ফেরত না দেয়া পর্যন্ত উদীচী’র এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেও এক বিবৃতিতে জানান উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি কামাল লোহানী এবং সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তাঁর কার্যালয় অথবা সরকারের পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংকের অনুদান ফেরত দেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হলে উদীচী ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ বিষয়টি আবারো বিবেচনা করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।