শহীদ অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ

গিয়াসউদ্দিন আহমেদ (জন্ম: ১৯৩৫ – মৃত্যু: ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সিনিয়র লেকচারার, মহসিন হলের হাউস টিউটর, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী ছিলেন। <!–more–>নরসিংদীতে জন্ম নেয়া গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, পরিবারে বাচ্চুদা নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি সেন্ট গ্রেগরী বিদ্যালয় থেকে ১৯৫০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় অষ্টম স্থান এবং ১৯৫২ সালে নটরডেম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় দশম স্থান অধিকার করেন। গিয়াসউদ্দিন দাবা, ব্রিজ (তাস), বাস্কেটবল, টেনিস বিভিন্ন খেলায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে দাবা চ্যাম্পিয়ন এবং এস এম হলের বাস্কেটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন।

গিয়াসউদ্দিন ১৯৫৭ সালে এম এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কিছুদিন জগন্নাথ কলেজে শিক্ষকতা করেন। এরপরে তিনি ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর ইতিহাস বিভাগের লেকচারার হিসেবে যোগ দেন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, রাজাকার ও আল-বদর বাহিনী পরিকল্পিত বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে তিনি অপহৃত ও পরে শহীদ হন। আল বদর বাহিনীর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খান এ অপহরণে নেতৃত্ব দেয়। তাকে সহযোগিতা করে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন নামের এক আলবদর সদস্য।

শওকত ওসমান

শওকত ওসমান (জন্ম: ২ জানুয়ার,ি ১৯১৭ – মৃত্যু: ১৪ ম,ে ১৯৯৮) বাংলাদশেরে একজন চন্তিক, লখেক ও কথাসাহত্যিক। তাঁর পতৈৃক নাম শখে আজজিুর রহমান। নাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রস-রচনা, রাজনতৈকি লখো, শশিু-কশিোর সাহত্যি র্সবত্র তনিি উল্লখেযোগ্য অবদান রখেে গছেনে। মুক্তযিুদ্ধ ও র্ধমনরিপক্ষেতার পক্ষে তনিি ছলিনে এক উচ্চকতি কণ্ঠরে অধকিারী। ‘ক্রীতদাসরে হাস’ি তাঁর একটি জনপ্রয়ি ঐতহিাসকি উপন্যাস। বাংলাদশেরে সাহত্যি, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধরি আন্দোলনে জীবনব্যাপী অবদানরে স্বীকৃতস্বিরূপ তনিি একুশে পদক, বাংলা একাডমেি পুরস্কার ও স্বাধীনতা দবিস পুরস্কার-এই তনিটতিইে ভূষতি হয়ছেলিনে। Continue reading শওকত ওসমান

রণেশ দাশগুপ্ত

রণেশ দাশগুপ্তের জন্ম ১৯১২ খ্রস্টিাব্দরে ১৫ই জানুয়ারি ভারতরে আসামরে ডব্রিুগড়।ে সকোলরে আর দশটা ময়েরে মতোই মা ইন্দুপ্রভা দাশগুপ্ত প্রসব-র্পূবে চলে গয়িছেলিনে আসামরে ডব্রিুগড়ে তাঁর পত্রিালয়।ে সখোনইে জন্মগ্রহণ করনে রণশে দাশগুপ্ত। মা ইন্দুপ্রভা (সনে) দাশগুপ্ত; বাবা অর্পূবরতœ দাশগুপ্ত। চার ভাই, পাঁচ বোনরে মধ্যে রণশে দাশগুপ্ত ছলিনে মা-বাবার দ্বতিীয় সন্তান। রণশে দাশগুপ্তরে ডাকনাম ছলি খোকা।

রণশে দাশগুপ্তরে শশৈব কাটে ভারতরে পুরুলয়িাত।ে পুরুলয়িায় রামপদ প-তিরে পাঠশালায় রণশে দাশগুপ্তরে হাতখেড়ি হয়। পরে রাঁচি জলো স্কুল থকেে তনিি ম্যাট্রকি পাস করনে ১৯২৯ খ্রস্টিাব্দ।ে ওই বছরই বাঁকুড়া খ্রস্টিান কলজেে র্ভতি হয়ে পররে বছর সখোন থকেে রাজনতৈকি কারণে বহষ্কিার হন রণশে দাশগুপ্ত। তারপর কলকাতা সটিি কলজে থকেে ১৯৩১ খ্রস্টিাব্দে আই.এস.স.ি পাস করনে তনি।ি এরপর বরশিালরে ব.িএম. কলজেে ইংরজেি সাহত্যিে অর্নাস নয়িে ব.িএ. শ্রণেতিে র্ভতি হন রণশে দাশগুপ্ত। নতুন বাসস্থান হয় জ্যঠেু সত্যানন্দ দাশগুপ্তরে বাসভবন ‘র্সবানন্দ ভবন’। রাজনীতি সংশ্লষ্টিতা এবং বাড়তিে বশেি বশেি লোক এসে ভীড় জমানোর কারণে অবশ্য পরে তনিি বএিম কলজে ছাত্রাবাসে চলে যান। শষে র্পযন্ত ব.িএ. পাস না করইে ১৯৩৩ খ্রস্টিাব্দে বরশিাল থকেে ঢাকায় চলে যান রণশে দাশগুপ্ত।

রণশে দাশগুপ্ত একবোরে স্কুলজীবনে রাজনীতরি সঙ্গে জড়ান। ‘টকেনক্যিাল স্কুল’-এর ছাত্র তাঁর চয়েে বয়সে সামান্য বড় হরপিদ দে তাঁকে রাজনীততিে নয়িে আসনে। তনিি প্রথমে ‘অনুশীলন গ্রুপ’-এর সঙ্গে জড়তি ছলিনে। স্বদশেী আন্দোলনরে পক্ষে তাঁর নতেৃত্বে ১৯৩০ সালরে জুলাই মাসে কলজেরে তনিজন ছাত্র মলিে বাঁকুড়ায় প্রথম ভারতীয় পতাকা তোলা হয়। এর প্রতক্রিয়িায় তাঁকে কলজে থকেে বহস্কিার করা হয়। বরশিাল বএিম কলজে ছাত্রাবাসে থাকা অবস্থায় ‘জাগরণী গোষ্ঠী’ নামে একটি বপ্লিবী গ্রুপ সংগঠতি করনে রণশে দাশগুপ্ত। পরে তনিি কমউিনস্টি র্পাটরি সদস্য হন। ১৯৫৮ খ্রস্টিাব্দে কমউিনস্টি র্পাটরি ঢাকা মউিনসিপিালটিরি কমশিনার র্প্রাথী হসিবেে নর্বিাচনে অংশ নয়িে নর্বিাচতি হন। তনিি বাংলাদশেরে অন্যতম বৃহত্তম প্রগতশিীল সাংস্কৃতকি সংগঠন ‘উদীচী শল্পিীগোষ্ঠী’ এবং ‘প্রগতি লখেক সংঘ’-এর প্রতষ্ঠিাতাদরে অন্যতম। রণশে দাশগুপ্ত প্রথম কারাবরণ করনে ১৯৪৮ সালরে র্মাচ মাস।ে বাংলা ভাষার পক্ষে প্রচারণার জন্য ভাষা আন্দোলনরে অন্যান্য নতেৃবৃন্দরে সাথে তনিি গ্রফেতার হন এবং বশে কছিুদনি কারাভোগ করনে। র্দীঘ ৭৬ বছররে রাজনতৈকি জীবনে প্রায় ১২ বছর তাঁকে কারাগারে অবরুদ্ধ থাকতে হয়।

রণশে দাশগুপ্ত কখনোই প্রথাগত চাকররি অভলিাষী ছলিনে না। ১৯৩৮ সালে ঢাকাতে নলনিীকশিোর গুহ সম্পাদতি ‘সোনার বাংলা’ পত্রকিার সহকারি সম্পাদক হসিাবে তাঁর র্কমজীবন শুরু হয়। পতিার মৃত্যুর পর সংসাররে র্অথাভাব মটোতে একটি ইনসওিরন্সে কোম্পানতিে তাঁকে চাকরি নতিে হয়। ১৯৫৫ সালে কারামুক্তরি পর স্বল্প সময়রে জন্য তনিি ইত্তফোকে যোগ দনে। এরপর ১৯৫৮ খ্রস্টিাব্দ থকেে বামপন্থীদরে পরচিালতি ‘দনৈকি সংবাদ’-এ যুক্ত হন। ১৯৭৫-র্পযন্ত এ সংযুক্তি অব্যাহত ছলি। এরপর পশ্চমিবঙ্গ থাকাকালীন সময়ে আর কোথাও র্কমসূত্রে সম্পৃক্ত ছলিনে না তনি।ি

লখেক রণশে দাশগুপ্ত ছলিনে জীবনঘনষ্ঠি সাহত্যিকি। তাঁর কাছে সাহত্যি নছিক সাহত্যিরে জন্য নয়; সাহত্যি ছলি বাস্তব সমাজ ও জীবনরে প্রতচ্ছিব।ি ১৯৫৬ সালে আত্মগোপনে থাকার সময় তনিি মাও সে তুং-এর ‘শত ফুল ফুটতে দাও’-এর অনুবাদ করনে এবং র্কাল র্মাকসরে জীবনী রচনা করনে। ১৯৫৯ সালে ‘উপন্যাসরে শল্পিরূপ’ প্রবন্ধগ্রন্থ প্রকাশরে মাধ্যমে সাহত্যি অঙ্গনে তনিি আত্মপ্রকাশ করনে। কারাগারে থাকাকালীন সময়ে প্রকাশতি হয় ‘আলজরেয়িার মুক্তসিংগ্রাম’ (১৯৬২), ‘শল্পিীর স্বাধীনতার প্রশ্ন’ে (১৯৬৬) ইত্যাদ।ি এরপর একে একে প্রকাশতি হয়- ল্যাটনি আমরেকিার মুক্তসিংগ্রাম (১৯৭০), আলো দয়িে আলো জ্বালা (১৯৭০), রহমানরে মা ও অন্যান্য গল্প (১৯৮৪), আয়ত দৃষ্টতিে আয়ত রূপ (১৯৮৬), সদেনি সকালে ঢাকায় (১৯৮৭), সাজ্জাদ জহীর প্রমুখ (১৯৮৮), মুক্তধিারা (১৯৮৯), সাম্যবাদী উত্থান প্রত্যাশা: আত্মজজ্ঞিাসা (১৯৯৪)। এছাড়াও তনিি হনেরি এলগেরে ‘দ্য কোয়শ্চেনে’-এর অনুবাদ, ফয়জে আহমদ ফয়জেরে কবতিা-অনুবাদ, জীবনানন্দ দাশরে কাব্যসম্ভার সম্পাদনা, র্গোক-িমায়াকোভস্ক-িনরেুদার কবতিা সংকলন, স্বাধীনতা-সাম্য-বপ্লিবরে কবতিা এবং অসংখ্য অগ্রন্থতি প্রবন্ধ ও কছিু অমর কবতিা রচনা করনে। র্দীঘ সংগ্রামী জীবনে সাহত্যি ছলি তাঁর জীবনসঙ্গী। ১৯৯৭ সালরে ৪ নভম্বের কলকাতায় মৃত্যুবরণ করনে রণশে দাশগুপ্ত।

মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী

বাংলা ভাষার উল্লখেযোগ্য শক্ষিাবদি, প্রাবন্ধকি ও গবষেক শহীদ মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর জন্ম ১৯২৬ সালরে ২২ জুলাই নোয়াখালীর বগেমগঞ্জ থানার খালশিপুর গ্রাম।ে বাবা বজলুর রহমি চৌধুরী ও মা মাহফুজা খাতুন। এই দম্পতরি পাঁচ সন্তান। মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর বাবা ছলিনে সকোলরে ম্যাট্রকিুলটে। মাত্র নয় বছর বয়সইে তনিি তাঁর সাহত্যিরসকি বাবাকে হারান। Continue reading মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী

মিশুক মুনীর

মিশুক মুনীর। পুরো নাম আশফাক মুনীর চৌধুরী (১৯৫৯ -১৩ আগস্ট ২০১১)। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে। নোয়াখালী জেলায় জন্ম নেয়া মিশুক মুনীর ছিলেন একাধারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সাংবাদিক, চিত্রগ্রাহক, চলচ্চিত্র ও ভিডিওগ্রাহক।

মিশুক মুনীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর (১৯৭৯-১৯৮৩) পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। মিশুক মুনীরই প্রথম ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ‘ভিডিও জার্নালিজম কোর্স’ চালু করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে পুরোদস্তুর সাংবাদিকতায় যুক্ত হন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি একুশে টিভির বার্তা প্রধান (পরিচালনা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কানাডার রিয়েল নিউজ নেটওয়ার্কেও হেড অব ব্রডকাস্ট অপারেশন্স হিসেবে দীর্ঘ আট বছর কাজ করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১০ সালে তিনি এটিএন নিউজে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দেন। মিশুক মুনীর একাডেমি অব কানাডিয়ান সিনেমা অ্যান্ড টেলিভিশন এবং কানাডিয়ান ইনডিপেনডেন্ট ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং কানাডিয়ান সোসাইটি অব সিনেমাটোগ্রাফির সহযোগী সদস্য ছিলেন।

২০১১ সালের ১৩ই আগষ্ট মানিকগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রখ্যাত পরিচালক তারেক মাসুদের সাথে নিহত হন মিশুক মুনীর।