সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক মঞ্চ গঠন

সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সমন্বিত লড়াই অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক মঞ্চ গঠনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে উদীচী আয়োজিত তিন দিনব্যাপী “সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক কনভেনশন”। ২১ ফেব্র“য়ারি রোববার সন্ধ্যায় উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানীকে আহবায়ক করে এ মঞ্চের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ বা কার্যকরী দল গঠন করা হয়। আগামী দিনে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একযোগে লড়াই-সংগ্রাম পরিচালনা করবে এ মঞ্চ। কনভেনশনের সমাপণী অধিবেশনে “ঢাকা ঘোষণা” পাঠ করেন উদীচীর সভাপতি কামাল লোহানী। এ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। পরে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন প্রথিতযশা শিল্পীরা। বিপ্লব রায়হানের গ্রন্থনায় গীতি আলেখ্য “স্বাধীনতার গল্প” পরিবেশন করে উদীচীর শিল্পীরা। এছাড়া, সঙ্গীত পরিবেশন করেন কফিল আহমেদ, সেমন্তি মঞ্জুরী, শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার, শুভেন্দু মাইতি, অসীম গিরি, রাজু বল, সুমা রানী রায়, সমগীত, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য সিদ্দিক মোল্লা প্রমূখ। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি টানা হয় উদীচী আয়োজিত তিন দিনব্যাপী “সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক কনভেনশন”-এর।

সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একই সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম অব্যাহত রাখার প্রত্যয় নিয়ে গত ১৯ ফেব্র“য়ারি বিকালে শুরু হয় উদীচী আয়োজিত “সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক কনভেনশন”। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী কনভেনশনের উদ্বোধন করেন তিন প্রবীণ বিপ¬বী কামাক্ষ্যা রায়চৌধুরী, কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডল এবং অধ্যাপক যতীন সরকার। ১৯, ২০ ও ২১ ফেব্র“য়ারি- এই তিন দিন চলে এ কনভেনশন। এতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, চীন ও জাপান।

কনভেনশনের দ্বিতীয় দিন শোষকদের বিরুদ্ধে শোষিতের সার্ক গড়ে তোলার আহবান জানান প্রবীণ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক যতীন সরকার। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত “সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক কনভেনশন”-এর দ্বিতীয় দিনে তিনি এ আহবান জানান। তিনি বলেন, বাংলার আবহমান সংস্কৃতিতে ধর্মবিশ্বাস যেভাবে শক্তপোক্তভাবে জায়গা নিয়ে রয়েছে, ঠিক একইভাবে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বা পরমত সহিষ্ণুতাও তাদের মননের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলার কৃষক-শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ একইসাথে ধর্মভীরু এবং অসাম্প্রদায়িক। আর মৌলবাদীরা নানা অপকৌশলে মানুষের মনে অসাম্প্রদায়িকতার এই ভিত্তিটিকেই দুর্বল করে দিতে চাইছে। ওদেরকে রুখতে হবে বলে জানান অধ্যাপক যতীন সরকার। এতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সাংস্কৃতিক কর্মীরা সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নিজেদের লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *