নজরুল সঙ্গীতের কালজয়ী শিল্পী ফিরোজা বেগম-এর মৃত্যুতে উদীচী’র শোক

firoza begum

নজরুল সঙ্গীতের কিংবদন্তি শিল্পী, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্নেহধন্য ফিরোজা বেগম-এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক শোক বার্তায় উদীচী’র কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাছে সরাসরি সঙ্গীত শিক্ষা নেয়া ফিরোজা বেগম সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে উপমহাদেশের কোটি সঙ্গীতপ্রেমীর কাছে নজরুল গীতির সুর ও মাধুর্য্য পৌঁছে দিয়েছেন। সঠিক সুর ও তালে, অনবদ্য গায়নশৈলীর সংমিশ্রণে তাঁর গাওয়া একেকটি গান শ্রোতাদেরকে বারবারই মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। নজরুল সঙ্গীতের প্রতি আজীবন অনুগত থেকে যে অসাধারণ একাগ্রতার পরিচয় দিয়েছেন ফিরোজা বেগম, তা নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কাছে অনুকরণীয় বলে শোক বার্তায় বলেন উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। ফিরোজা বেগম-এর মৃত্যুতে সঙ্গীত জগতে যে শুন্যতা তৈরি হয়েছে তা কখনোই পূরণ হবার নয় বলেও মনে করেন কামাল লোহানী ও প্রবীর সরদার।

১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই তৎকালীন ফরিদপুর (বর্তমান গোপালগঞ্জ) জেলার রাতইল ঘোনাপাড়া গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্ম নেয়া ফিরোজা বেগম পরিবারের ঐতিহ্য অনুযায়ী ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন। দশ বছর বয়সের আগেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সান্নিধ্যে আসেন ফিরোজা বেগম। তাঁর কণ্ঠে নিজের লেখা গান শুনে মুগ্ধ হয়ে নজরুল ইসলাম ফিরোজা বেগমকে নিজের শিষ্য করে নেন। তবে, কাজী নজরুল ইসলামের আকস্মিক অসুস্থতার জন্য বেশিদিন তাঁর কাছে সঙ্গীত শিক্ষার সুযোগ পাননি ফিরোজা বেগম। মাত্র ১২ বছর বয়সে প্রথম রেকর্ড বের হওয়ার পর ফিরোজা গাওয়া “মোমের পুতুল” গানটি সাড়া ফেলে। কাজী নজরুল ইসলামের বেশিরভাগ গানে সুরারোপ করা সুরকার কমল দাশগুপ্তের সাথে ১৯৫৫ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজা বেগম। সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নজরুল গীতি গেয়ে উপমহাদেশের কোটি সঙ্গীতপ্রেমীর পিপাসা মিটিয়েছেন ফিরোজা বেগম। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগে গত ০৯ সেপ্টেম্বর রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফিরোজা বেগম।

নজরুল সঙ্গীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফিরোজা বেগম-এর মৃত্যুতে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।