গণসংস্কৃতিই পারে জনগণকে একত্রিত করতে : কামাল লোহানী

সংস্কৃতি যেমন মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ তেমনি কিন্তু সংগ্রামেরও ইতিহাস। আবেগ না থাকলে যেমন মানুষ হয় না তেমনি মানুষের লড়াই-ই একদিন চূড়ান্ত পরিনতিতে আবেগের পূর্ণতা এনে দেয়। এ আবেগ আদর্শের। যার উপর মানুষ আস্থা স্থাপন করতে পারেন। সংস্কৃতি মানুষের যুদ্ধের হাতিয়ার। সে যুদ্ধ সমাজকে কলুষমুক্ত করে। পরিশীলিত স্বপ্নকে সুন্দর আর কল্যাণের অভিযাত্রাকে সফল করে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে দেশকে সুখী সমৃদ্ধিশালী করে গড়ে তোলে। আমরা তো সেই চমৎতার ভাবষ্যতকে স্বপ্ন দেখে নিজেদের সংগঠিত করি এবং সাহসী হই শেণীবৈষম্যের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ভেঙে সমাজতান্ত্রিক কাঠামোকে আলিঙ্গন করতে কাণে আমরা পূর্বপুরুষ থেকে শিক্ষা পেয়েছে লড়েই অধিকার আাদায় করে নিতে হয়। দেশতো পরাধীনতার শৃংখল ভেঙে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদকে বিতাড়িত করেছিল সাবধীনতার প্রথম যুদ্ধজয়ে কিন্তু সাম্রাাজ্যবাদঅ কুচক্রান্তেও ফাঁকে ফেলে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে দিয়ে গেল এবয় ভারত ভূমিকে বিভক্ত কওে হিন্দুস্থান-পাকিস্তার বানিয়ে রেখে চলে গেল। পূর্বপুরুষের গৌরবোজ্জল ঐতিহ্য অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও পারস্পারিক সম্প্রীতির মূল্যবোথকে চিনসংঘর্ষেও কুৎসিত এবং ভয়াবহ পরিনতির দিকে ঠেলে দিয়ে গেল। বাংণার মানুষের হাজার বছরের এতিহ্য-ইতিগাসকে কলুষিত করার সমাজে ও সংস্কৃতিকে বিনষ্ট করার এ অপকৌশল অন্ততঃ আমাদেও পূর্ববঙ্গে বাঁধার সম্মুখীন হলো সাধারন মানুষের সচেতনতায়। সংগ্রমি সংক্ষুব্দ হয়ে উঠলো বাংলা। সংস্কৃতি, রাজনীতি হাতে হাতে ধওে এগিয়ে চলতে থাকলো। প্রগতিশীল আদর্শিক রাজনীতির পক্ষ অনুসরন কওে মানুষ যেন সংঘবদ্ধ হতে থাকলেন মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষা ও সংস্কৃতির কল্যাণচিন্তায়। এরই মাধ্যমে সংঘবদ্ধ মানুষ চেতনাকে শাণিত করেছেন এবং শত বাধা বিপত্তি, নিপীড়ন, নির্যাতন সত্ত্বেও নিজস্ব অস্তিত্ব এবং উত্তরাধিকার বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ বোধ করেছেন তারাই, যাঁরা দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, জনগণে আস্থবান এবয় শ্রেণীশোষণহনি সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে নিবেদিতপ্রাণ। এই বিশ্বাসসে সত্যবান মানুষগুলো আজও আছেন, রৈী পরিবেশ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে আদর্শচিন্তা অনুসরন কওে মাতৃভূমিকে সকলপ্রকার শোষণ এবয় কপট ও স্বৈরাচারী শাসন থেকে বের কওে আনতে চান। কিন্তু বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ, পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক ও সামন্ত শক্তির বিরুদ্ধে লডাই কওে আমরা জনগণ অভ্যূত্থানের মাধ্যমে যে সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছিলাম তারই চূড়ানত বিস্ফোরন বুঝি ঘটলো একাত্তওে মুক্দিযুদ্ধেও মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধে পরিবেশ আমাদেও সংঘবদ্ধ শক্তিতে লড়াইয়ের ময়দানে টেনে নামানো বটে, ধর্মনিরপেক্ষতা,গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্রেও শ্লোগানে প্রাণ বিসর্জন দিতেও দ্বিধা করলাম না, কিন্তু লাখো শহীদেও রক্তের বিনিময়ে কি পলোম আমরা? আজ হাত কামড়ে বলতে হচ্ছে ‘ নাকের বদলে কি নড়–ন পেয়েছি আমরা?’ কেন এমন হলো? এ জন্য কি আমরাই দায়ী নই?

মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম লোকজ সংস্কৃতি, পূর্বপরুষদেও ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও তার ইতিহাসই আমাদেও যেহেতু লড়াইয়ের সাহস, তখন এই সমৃদ্ধ সংস্কৃতি যে রাজনীতি তৈরি করবে তাই হবে আমাদেও যাত্রাপথের শক্তি। কিনতু সে গুড়ে বালি! যাও বা শুরি হয়েছিল পরিবর্তনের অথবা নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণার মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের প্রথম দিনে মুিজব আমলে তারও বিকৃতি ঘটলো ১৫ আগস্ট বর্বোরোচিত হত্যাকান্ডের পর সেনাশাসন আমলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পদক্ষেপ নিয়ে বাংলার নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিকে লালনের সূচনা করেছিলেন তাকেই ধ্বংস করলেন সেনা শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান। এরই মাধ্যমে আমরা মুক্তিযুদ্ধেও অনন্য ফসল ও মুক্তিযুদ্ধপূর্ব সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বলিষ্ঠ ভূমিকা লক্ষ্য করি গণসঙ্গীত, নাটক, চিত্রকলা, এবং গণসাহিত্য এসবের মাধ্যমে। যা সূচসা করেছিল স্বতন্ত্র ধারা। সেই ধারা তো আজ নেই-ই, এমনকি এদেশের সাধারন মানুষের সৃষ্ট লোক সংস্কৃতির যে ঐশ্বর্য আমাদেও রয়েছে তাকেও আমাদেও দেশের রাজনৈতিক তো দুরের কথা সাংস্কৃতিক ব্যক্তি কিংবা সাংস্কৃতিকমনারাও কোনদিন লালনের কোন চেষ্টাই করেননি। এব্যাপারে সবসময়ই যতœবান ছিলেন মার্কসবাদে বিশ্বাসী ও সমাজতন্ত্র মানসিকতার কমীসংগঠক নেতা বা দল গোষ্ঠীই এককভাবে চেষ্টা কওে গেছে সত্যিকার অর্থে গণসংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য, যা কেবল মানুষের দুঃধকষ্ট, অনন্দবেদনা, লড়াই সংগ্রামে সূচিত হয়ে এসেছে। অদর্শিক রাজনীতি ছাড়া কোন সংসদীয় রাজনীতি বা শাসন ক্ষমতায় আসীন দল কখনই সংস্কৃতিকে রাজনৈতিক বিষয় বলে মনে করেন না। রাজনীতি যে সয়স্কৃতি থেকে আলাদা নয় এবং সংস্কৃতিও রাজনীতি বিচ্ছিন্ন নয়, একথা তারা বিশ্বাস করেন না। এরা অবশ্য মুক্তিযুদ্ধোত্তর কালে নিজস্ব সাংস্কৃতিকদল গঠন করেছে কিন্তু প্রয়োজনে তারা সেই সয়গঠনকে নিজেদেও মত কওে ব্যবহার কওে থাকে বা করতে চায়। অথচ রাজনীতি যে সংস্কৃতিবিচ্ছিন্ন নয়, একথা মানতে চায় না।

রাজনীতি যেমন মৌলবাদী সাম্প্রদায়ক রাজনীতির খপ্পওে পড়ে গেছে নিজেদেও ব্যর্থতা এবং আদর্শিক রাজনীতিকে গ্রহণে যারা অনিচ্ছুক এবং বিনোদনের সামগ্রী হিসাবে যারা সংস্কৃতিকে দেখে, তাদেও সংমিশ্রণে দেশে অপসংস্কৃতি, কুসংস্কৃতি উদ্ভট শব্দ ও কুআচারকে পর্যন্ত প্রশ্রয় দিয়েছেন। তারা স্বদেশের মাল্টি ে মানুষের সৃষ্ট বঙ্গসংস্কৃতিকে উপেক্ষা কওে বিদেশ থেকে আমদান করা উৎকট অসভ্য ‘গান-নাচ-বাজনা’ গ্রহণ কওে নিজেদেও কেবল ‘উত্তেজিত’ করেছে। অসামাজিক সংস্কৃতির বেরেল্লাপনাই বাড়িয়ে গেছে। চেয়ে দেখেনি দেশায় সংস্কৃতির বিপুল ভান্ডার। আজ তাদেরই রাজস্ব সবখানে। নিজস্ব সংস্কৃতি লালন করার যে তাগিদ তা সরকারের নেই। ফলে অপসংস্কৃতি ঢুকে পড়ছে সংস্কৃতির আবরনে। আবার আধুনিকতার অজুহান দিচ্ছে কেউ কেউ। বলছেন, অগ্রগতির সাথে থাকতে হলে আজ এই ‘প্রাপ্তির’ সাথে তাল মলোতে হলে এই সংস্কৃতিকে ধারন করেই এগুতো হবে। আমাদেও মধ্যেই কেউ কেউ কর্পোরেট পুঁজির বিরোধিতা করছে কিস্তু অনুষ্ঠান করতে গিয়ে তাদেও কাছে হাত পাতছে। ভোগবিলাসী লোভাতুর “পূজি” কর্তাদেও কৃপাধন্য হয়ে অনেকেই আমরা আত্মতৃপ্তি লাভ করছি এবং যুক্তি হিসেবে বলছি, ওরা আমাদেও দেশে ব্যবসা কওে লভ্যাংশ নিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমাদেও অংশতো আছেই। ভেবে দেখবেন তো, এটা কি সঠিক চিন্তা? ঐ পূজিবাদী বিত্তবান কিংবা পূঁজিদাসদেও অনুগ্রহ ধন্য হয়ে কি আমরা নিজস্ব সংস্কৃতির উন্মেষ সাধন করতে পারছি? জবাব অবশ্যই না আসবে। কারন ঐ অপসংস্কৃতির এজেন্ট-দাললরা অপ—– পূঁজিবাদীদেও লেজুড় সৃষ্টি করছে ‘ অতিজাতীয়বাদী’ ভড়ং ধরে। এদও রুখে দিতে হবে। এরাই দেশীয় সংস্কৃতির প্রধান দুষমন।

দেশজ সংস্কৃতিকে ধর্মন্ধতার মড়কে মুছে ফেলার অপকৌশলে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি হরহামেশাই —– কওে যাচ্ছে, তাদেও বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোরাই আমাদেও সবচেয়ে বড় কর্তব্য আজ। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রব্যবস্থা অর্জন এক লোভনীয় উপায় তারা অবলম্বন কওে দেশের সরল প্রাণ সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত কওে প্রিয় মাতৃভূমিকে ‘ ———— জাহেলিয়াত’ জামানার তিকে ঠেলে দিতে চক্রান্ত এই ধর্মব্যবসায়ী চক্র। ধর্মভীরু জনগণকে ধর্মেও দোহাই দিয়ে নিজেদেও লোভ-রালসা চরিতার্থ করার জন্য মরনপন কওে সকল সময়েই এই গণবিরোধী ফায়দা লোটার চেষ্টা কওে এসেছে এবং আজ সহিংস ষড়যন্ত্র চালিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বতে বিপন্ন করতে স্পর্ধা দেখাচ্ছে। ই প্রক্রিয়ায় তারা জনগণ ও জন্মভূমির বিরুদ্ধে হিংস্রতার আশ্রয় নিয়ে মানুষ হত্যা করছে আজও। নানান অছিলা আছে তাদের। কিন্তু বিপুল অর্থসম্পদেও অধিকারী জামাত ও তাদেও দোসরেরা অজ মনে হচ্ছে মরিয়া হয়ে জনগণের বিরোধিতায় প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা ও তার ফসলকে ধ্বংস করার সাক্ষ্য দেশব্যাপী তান্ডব চালয়ে মানুষ ও রাষ্ট্রকে কিপদে ফেলার কৌশল নিয়েছে। যদি এ অপকৌশলে সফল হতে পাওে তবে তারা বাংলাদেমের ‘কোল-নলচে’ এবং বাংরার জনগণের ভাষা-সংস্কৃতি এবয় সর্বোপরি রাজনীতিকে পাল্টে ফেলে তাদেও সাম্প্রদায়িক —– শাসন ব্যবস্থা কায়েমের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, উগ্র জাতীয়বাদী সমর্থনের বদৌলতে।

অর্ম ব্যক্তি সম্পদ, সে প্রশ্নে আমি কিছু বলতে চাই না। কিন্তু রাষ্ট্র নানা ধর্ম বর্ণ দল মত নির্বিশেষে প্রতিস্ঠিত এবং একটি সংবিধানের মাধ্যমে পরিচালিত। এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। জনগণতো হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃস্টান নানান বর্ণেও মানুষকে নিয়ে। তাইতো আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা অসাম্প্রদায়িক বংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধর্মনিরপেক্ষ এবং সমাজতন্ত্রেও শ্লোগান দিয়েছিলাম। প্রশ্ন জাগে যুদ্ধাপরাধী সেই মৌলবাদীরাই আজ কেন আমাদেও প্রতিপক্ষ। এদেও তো এদেশে থাকবারই কথা ছিলনা। অনেকে তো পাকিন্তানী সেনাবাহিনীর সাথে চলে গিয়েছিল। কিন্তু তাদেও আবার পুনর্বাাসিত কওে মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের অভ্যূদয়বিরোধী শক্তির উত্থান যেভাবে ক্ষমতালোভের চক্রান্তে করা তা আমদেও প্রিয়তম স্বাধীনতাকে শকুনিরা খামচে ধরেছে। সেই ক্ষত আজও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তাই আজ দায় জনগণের নিজস্ব সংস্কৃতি ও প্রত্যাশিত রাজনীতি রক্ষা করার।

সংস্কৃতি যেহেতু জনগণের এবং রাজনীতি সম্পৃক্ত, তাই রাজনীতি যখন দুষিত হয়, তখন সমাজ সংস্কৃতিও কলুষিত হয়। আজ তার চেয়েও বড় াপরাধের দায় আমাদেও বহন করতে হচ্ছে। কারন আমরা সচেতন জনগণ প্রগতির চিন্তা যাদেও দায়িত্ব ছিল, তারাও কেন জানি না অনৈক্যেও বিপন্নতায় আটকে আছি। আমরাও যথাসময়ে প্রয়োজনানুসাওে আমাদেও মহান অভিযাত্রার সঠিক নির্দেশ নির্ধারন করতে পারিনি। আর সে কারনেই অপসংস্কৃতি ও দেশী-বিদেশী গণবিরোধী সামাজ্যবাদী শক্তির পূঁজিবাদী ভোগবিলসিতা ও লুটেরা রাজনীতির খপ্পওে পড়ে আমরাও খাবি খাচ্ছি। এমতাবস্থায় জনগণের নিজস্ব সম্পদ চক্রান্তকরীদেও হাতে বিনষ্ট, ধ্বংস এবং লোপাট হওয়ার পথে ক্রমশঃ ধাবিত হয়েছে। আমরা কেবলই চেয়ে চেয়ে দেখেছি কিন্তু এই প্রবনকাকে প্রতিরোধ করার যে সাংগঠনিক-রাজনৈতিক ঐক্যবদ্ধ শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত ছিল তা থেকে দুওে থেকেছি। কোন সরকারের আমলেই বলতে পারিনি, এ অন্যায়, একে গ্রঞণ করি না। তবে কি সাহসের অভাব ছিল আমাদেও মনে? কেন তবে পারলাম না।

আমরা যারা প্রগতিশীল বলে নিজেদেও দাবী করি, তারা কেন আজ পর্যন্ত প্রয়োজনে ্ৈক্যবদাধ প্রয়াসে শত্র“কে মোকাবেলা করতে সংঘবদ্ধ হতে পারিনি? অথচ এটাতো লক্ষ্য কওে চলেছি, প্রতিপক্ষ প্রতিনিয়ত নিজেদেও শক্তিকে সুসংহত কওে যাচ্ছে। আমরা কেমন যেন নিরুপায় হয়ে পড়েছি।

আমাদেও নতুনকে আবাহন করতে কোন আপত্তি নেই, তাই বলে যা কিছু ঘটে চলেছে, আমাদেও নিজস্ব সংস্কৃতিকে কলুষিত করছে, তার প্রতিবাদ করছি না। বেনোজলের মত দেশী-বিদেশী অপসংস্কৃতি আমাদেও গ্রাস কওে ফেলেছে, তার বিপরীতে আমরা নিজস্ব সংস্কৃতি বিমেষ কওে সংগ্রাম সঞ্চাত গণসংস্কৃতি লালন ও চর্চা করতে পিচেয়ে রয়েছি। যে রাজনীতি জীবনের সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যায় সংগ্রামের পধ ধওে ইদিহাসের অধ্যায়ে, সেই সংস্কৃতিকে অনেকাংশেই আমরা বিসর্জন দিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধেও চেতনার কথা মুখে বলে মুক্তিযুে কোলে উচ্চারিত প্রাণস্পর্শী ধ্বনি- ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রকেই জলাঞ্জলি দিতে বসেছি। তবুও চৈতন্যোদয় ঘটছে না সংসদীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রকদের। যারা সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী তাদেও মধ্যেও কেমন যেন হতাশার ঝিমুনি লক্ষ্য করছি। এমনি যদি হয় তবে মুক্তিযুদ্ধকে যারা পরিকল্পিতভাবে বিরোধিতা করেছিল তারা কি আর বসে থাকবে? থাকেনি। তাই আজ মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় বিশ্বাসী এবং নিজ অস্তিত্ব রক্ষায় প্রয়াসী ষক্তির উপরই দায়িত্ব বর্তেছে মাতৃভূমি ও তার সম্পদ রক্ষায়। আমদেও মতন সম্পদশালী দেশকে যারা দরিদ্র বলে অভিহিত কওে নিজেদেও অন্যেও কাছে খাটো কওে রাখতে চাইছে, তারা আজ সোচ্চার নিজেদেও স্বার্থ উদ্ধারে। সুতরাং পরমুখাপেক্ষী ও ক্ষমতালিপসুরা কখনও নিজ দাপট ছাড়া দিশ ও জনগণের কল্যাণে যে কিছু করবে না, সে তো এই চল্লিশ বছরেই প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ কওে এমন কওে ক্ষমতা প্রত্যীশীদেও মদ্যে যদি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তি প্রবল থাকে। বিগত চার চারটি দশকে আমরা তো মুক্তিযুদ্ধ বিরোদী অপশক্তি জামাত-শিবির ও তাদেও মদদপুষ্ট িিব এন পি —– ক্রমশঃ বাংলার ঐতিহ্য-ঐশ্বর্য ধবংস করতে উদ্যত কিন্তু তাদেও কোন প্রতিরোধের চ্যালেঞ্জের মোকবিলা করতে হয়নি। নির্বিঘেœ তারা পুষ্ট হয়েছে, বেড়ে গেছে। আর মুক্তিযুদ্ধবিশ্বাসী শিবিওে ধস নেমেছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যাশিত ফসল যা অজূন করেছিরাম, তাও ঐ মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক এবং উগ্র জাতীয়তাবাদী অপশক্তির কবলে ক্রমশঃ জড়িয়ে পড়ছে। এদেও পিছনে মদদ যোগান দিচ্ছে বিদেশী রাষ্ট্রের গণবিরোধী এবং মৌলবাদী সরকারী প্রশাসন।

সুতরাং আমাদেও লক্ষ্য হওয়া উচিত, সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে যে রাজনৈতিক অভিযাত্রা আদর্শেও পথ ধওে চলে এবং দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হয়, তাকে আবহন জানান নতুন কওে বলিষ্ঠ ভূমিকায় জনগণের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে যেন সকল উস্কানি, চক্রান্ত, বাঁধা-বিপত্তি উপেক্ষা কওে সংঘবদ্ধ প্রয়াসে সংস্কৃকিবিরোধী অপশক্তিকে পরাভূত কওে মার্কসীয় সয়স্কৃতি অর্থাৎ জনগণ গ্রঞণযোগ্য ও নন্তি সংস্কৃত চর্চা করতে পারি, তারই আয়োজন করতে হবে। এই আয়োজন করতে হলে সাধারন মানুসের কাচে পৌঁছাতে হবে, যেমন কওে সংসদ রাজনীতির দেশগুরো যায় তেমন করে। মমত্ববোধের সাথে রাজনীতি অভিযাত্রায় সবাইকে ঐক্যবদাধ করতে হবে। জনঘণের কাছে গিয়ে তাদেও মাধ্যমে অঙ্গীকরাবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণ করতে হবে, তবেই অভীষ্ট লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারবো। জনগণের ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছে তাদেরকেই এগিয়ে নিতে হবে আমাদওে সংস্কৃতিতে, যাকে আমরা বলি, জনগণের সংস্কুতি। এই মেলৈ সংস্কুতি সম্পদই আমদেও পথ দেখাবে সামনে চলার।