উদীচী সংগঠন ও রীতি পদ্ধতি

উদীচী সদস্যপদ
গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং উদীচীর ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক চেতনা সম্পন্ন বাংলাদেশের যে কোনো অঞ্চলের ১২ বছর বা তদুর্ধ বয়স্ক যে কোনো ব্যক্তি সদস্যপদ লাভের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। উদীচীর কর্মকা-ে উৎসাহী হয়ে অনেকেই সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। মনে রাখতে হবে, উদীচীর কার্যক্রমের দুইটি প্রধান দিক একটি পারফর্মিং বিভাগ অন্যটি সংগঠন। প্রত্যেক শাখা সংগঠনেরই সঙ্গীত, আবৃওি,নাটক, নৃত্য ইত্যাদি বিভাগ থাকার নিয়ম রয়েছে। এসব বিভাগে আগ্রহী যে কেউ যুক্ত হতে পারে। তাদের সকলেই উদীচীর সদস্য হতে হবে তা নয়। এসব বিভাগে বেশী সংখ্যক শিল্পী কর্মীকে যুক্ত করে ধীরে ধীরে তাদেরকে বিভাগের পারফমিং ক্ষেত্রে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে, একই সাথে উদীচীর আদর্শে উজ্জীবিত করে সদস্য করে নিতে হবে। কোন একজন আগ্রহী ব্যক্তি যখন উদীচীতে পারফর্ম করতে আসেন তখন তিনি মেধা মনন ও আচরণে শতভাগ পরিশুদ্ধ সংস্কৃতিবান হয়েই আসবেন এমনটা আশা করা ঠিক নয়। আমরা আমাদের শত শত বছরের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, অজ্ঞানতা, সামাজিক পশ্চাদপদ ধ্যান ধারনা ইত্যাদি থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্ত নই। কাজেই যে বন্ধুটি সংগঠনে নতুন এলেন তাকে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক, প্রগতিশীল চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করা সংগঠকদের দায়িত্ব। নতুন বন্ধুটি নির্দিষ্ট বিভাগে কাজ করতে গিয়ে উদীচীকে যেমন জানবে, তাকেও তেমনি সংগঠন জানবে। এই পারস্পরিক জানা বোঝার ভিতর দিয়ে তাকে সদস্যপদ দানের বিষয়টি বিবেচনা করা সহজ হয়ে যাবে। সদস্যপদ প্রার্থীকে নির্ধৃারিত ফরম পূরণ করতে হবে এবং তাতে অবশ্যই শাখা অথবা জেলা সংসদের কার্যকরি কমিটির দুইজন সদস্যের সুপারিশ থাকতে হবে। শাখা সংসদের সভায় সদস্যপদ দানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং তা চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জেলা সংসদে প্রেরণ করতে হবে। সদস্য ফরমের কপি ছবি সহ প্রত্যেক শাখার ফাইলে তালিকাসহ সংরক্ষণ করা আবশ্যক যাতে প্রত্যেক সদস্যের প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী সহজে পাওয়া যায়। যে শাখায় যত বেশি সাংস্কৃতিক তৎপরতা সেখানে সদস্য প্রার্থীও তত বেশি হয়। প্রতিনিয়ত আবৃত্তি, নাটক, সঙ্গীত, নৃত্য চারুকলা, চলচ্চিত্র প্রদর্শন, সাহিত্য সভা, লেখালেখি, পাঠচক্র ইত্যাদি ব্যাপক ও সৃজনশীল কর্মকা-ের মাধ্যমে নতুন নতুন শিল্পীকর্মীকে যুক্ত করে তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সদস্য করার উপযোগী করে গড়ে তলতে হবে এবং নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। এটাই উদীচীর স্বাভাবিক সাংগঠনিক প্রক্রিয়া।
সদস্য সংগ্রহ অভিযান ইত্যাদির মাধ্যমেও কোথাও কোথাও নতুন সদস্য সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এই সদস্যদেরকে পারফমিং বিভাগ বা অন্য কোনো সাংগঠনিক বিভাগে কাজের সাথে যুক্ত করা না গেলে কাগজে কলমে হয়তো বড় তালিকা দেখানো যাবে কিন্তু প্রকৃত অর্থে সেটা সাংগঠনিক শক্তি নয়। উদীচীতে নানা মত ও পথের মানুষের সম্মিলন ঘটবে কিন্তু উদীচীর সদস্যপদ কেনো অবস্থাতেই সমাজবিরোধী, সাম্প্রদায়িক মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের দেয়া যাবে না । ভ্রষ্ট, চরিত্রহীন ব্যক্তি যতবড় শিল্পী হোক না কেন তার স্থান উদীচীতে নেই।

শাখা  গঠন
দেশের সর্বত্র শিল্পী, গীতিকার,সুরকার,নাট্যকার,কবি,চিত্রশিল্পী,সংস্কৃতিমনা ইত্যাদি অসংখ্য মানুষ রয়েছেন যারা উদীচীর আদর্শ ও চিন্তাধারার সাথে সহমত পোষণ করেন। তাদেরকে সংগঠিত করে গণমানুষের কাছে সংস্কৃতির চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই উদীচীর শাখা গঠন অপরিহার্য। জেলা সংসদের পক্ষ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করে থানা পর্যায়ে এবং আরো তৃণমমূল পর্যায়ে শাখা গঠনের উদ্যোগ নিলে এবয় লেগে থেকে কাজ করলে অবশ্যই শাখা গঠন করা সম্ভব। শাখা গঠনের সময়ও উদীচীর স্বাভাবিক সাংগঠনিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থাৎ একই সঙ্গে পারফর্মিং বিভাগ গড়ে তুলতে হবে এবং সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। শুধুমাত্র পারফর্র্মিং বিভাগ গড়ে নাটক, সঙ্গীত ইত্যাদির চর্চা করলাম কিন্তু সাংগঠনিক কাঠামো তৈরী করলাম না তা সুবিবেচনা প্রসুত নয় এবং উদীচীর গঠনতন্ত্র সম্মতও নয়। আবার সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলে পারফর্মিং বিভাগ গড়ে তুললাম না সেক্ষেত্রে সংগঠন বন্ধ হয়ে পড়বে। জেলা সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে একজনকে আহবায়ক এবং অনুর্ধ্ব দুই জনকে যুগ্ন আহবায়ক করে স্থানীয় প্রয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী অন্যান্যদের সদস্য করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে  শাখা গঠন করা যেতে পারে। আহবায়ক কমিটি অনুর্ধ্ব  ৬ মাসের মধ্যে শাখা সম্মেলনের আয়োজন করবে। সম্মেলনে পূর্ণাঙ্গ  শাখা কমিটি গঠিত হয়।
প্রত্যেক শাখার  নি¤œলিখিত বিষয়গুলো থাকা বাঞ্ছনীয়
১। একটি কার্যালয় একাধিক মহড়া কক্ষ (সম্ভব হলে) এলাকার কোন স্কুল কলেজের একটি বা একাধিক কক্ষ। কোনটি সম্বব না হলে কোন সদস্য বা শুভানুধ্যায়ীর বাসা/বাড়ির একটি কক্ষ যেখানে নিয়মিত বসা ও মহড়া করা যায়।
২। সভার কার্য়বিবরণীর খাতা ও সিদ্ধান্ত (জবংঁষধঃরড়হ) খাতা
৩। সদস্য তালিকা খাতা ও সদস্য ফরমের ফাইল।
৪। সংগঠনের পতাকা, জাতীয় পতাকা ও শাখার নামে ব্যানার ও সাইনবোর্ড।
৫। হারমোনিয়াম,তবলা সহ অন্যান্য আবশ্যকীয় বাদ্যযন্ত্র।
৬। গঠনতন্ত্র ,ঘোষণাপত্র ও অন্যান্য পুস্তিকা সংরক্ষনের ব্যবস্থা।
৭। উর্ধ্বতন কমিটির সার্কুলার, চিঠি সংরকক্ষনের ফাইল বিভিন্ন সভা ও অন্যান্য নোটিশের ফাইল।
৮। চাঁদা আদায়ের রশিদ।
৯। হিসাবের খাতা (ক্যাশ বুক ও লেজার)।

জেলা সংসদের ক্ষেত্রেও বর্ণিত বিষয় গুলো থাকা অপরিহার্য।

সম্মেলন
প্রতি দুই বছর অন্তর সকল স্তরের সংগঠনের সম্মেলন বাধ্যতামূলক। উদীচীর সম্মেলন সংগঠনের জন্য ভিন্ন মাত্রা বয়ে আনে। অনেক সংগঠন আছে যাদের কাছে সম্মেলন মানেই একটি নতুন কমিটি গঠন। তাই ভবিষ্যত কমিটি কি হবে তাতে কাঙ্খিত পদে নিজের নামটি নিশ্চিত করার জন্য দলাদলি,লবিং,কোন্দল ইত্যাদি শুরু হয়ে যায়। উদীচীর সম্মেলন এর থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। নতুন নেতৃত¦ নির্বাচন অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বটে কিন্তু বিগত সময়ের সামগ্রিক কার্যক্রমের পর্যালোচনা করে অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা বের করে আনা সফলতা- ব্যর্থতা বিশ্লেষন, নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি ও কর্ম পরিকল্পনা তৈরী ইত্যাদিও আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলন যাতে সর্বাত্মকভাবে সফল হয় সেই লক্ষ্যে অনেক আগে থেকেই যাবতীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করা দরকার।

সম্মেলনের কার্যাবলী
সম্মেলনের সামগ্রিক কর্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটিকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে। অর্থাৎ শাখার ক্ষেত্রে শাখা কমিটি এবং জেলার ক্ষেত্রে জেলা কমিটিই সম্মেলনের আয়োজন করবে। কাজের সুবিধার জন্য এবং কমিটির বহির্ভূত সদস্যদেরকে সম্মেলনের কাজে যুক্ত করার জন্য প্রয়োজনে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। বড় আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিভিন্ন উপ কমিটিও করা যেতে পারে যেমন: অর্থ উপ পরিষদ, অনুষ্ঠান, সাজসজ্জা, শোভাযাত্রা, দপ্তর, সেচ্ছাসেবক, ব্যবস্থাপনা, প্রচার ও প্রকাশনা, আপ্যায়ন ইত্যাদি। সম্মেলনের পুরো কার্যক্রম দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১। উদ্বোধন ও অন্যান্য উন্মুক্ত অনুষ্ঠান
২। সাংগঠনিক অধিবেশন

উদ্বোধন ও উন্মুক্ত অনুষ্ঠান
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যথাসম্ভব  জাঁকজমক ভাবে করাই বাঞ্ছনীয়। এতে করে কর্মীদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য দেখা দেয়। শুভানুধ্যায়ী এবং জনগণের সাথে যোগাযোগ গড়ে উঠে। এ অনুষ্ঠানের কার্যক্রম সাধারণত নিুরূপ :
১.    জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় পতাকা, সংগঠনের পতাকা উত্তোলন ।
২.    পায়রা/বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন ঘোষণা।
৩.    শোভাযাত্রা।
৪.    আমন্ত্রিত বিশিষ্ট জনের অংশগ্রহণে আলোচনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্য।
৫.    সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি ইত্যাদি পরিবেশনা।

সাংগঠনিক অধিবেশন
সম্মেলনের মূল কার্যক্রম হল সাংগঠনিক অধিবেশন । অনেক শাখা ও জেলায় দেখা যায় সংগঠক ও কর্মীরা উদ্বোধন ও উন্মুক্ত অনুষ্ঠান নিয়ে এতই ব্যস্ত হয়ে যান যে সাংগঠনিক অধিবেশনের জন্য পর্যাপ্ত সময় খুঁজে পাওয়া যায় না। সাংগঠনিক অধিবেশনের কাজটি হয়ে যায় গৌণ। মনে রাখতে হবে সাংগঠনিক অধিবেশনকে সফল করার জন্য প্রয়োজনে সম্মেলনের উন্মুক্ত অনুষ্ঠান ছোট করতে হবে অথবা অন্য কোন সুবিধাজনক  দিনে উন্মুক্ত অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। উন্মুক্ত অনুষ্ঠনের অজুহাতে সাংগঠনিক অধিবেশনের সংকোচন গ্রহণ যোগ্য নয়।
সম্মেলনের কমপক্ষে ১৫দিন পূর্বে সম্মেলনের তারিখ, স্থান ও সময় উল্লেখ করে সম্মেলনের নোটিশ শাখা সদস্যদের (প্রতিনিধি/পর্যবেক্ষক)  হাতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। উর্দ্বতন কমিটি থেকে কে প্রতিনিধি হয়ে সম্মেলনে যাবেন তা আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। সম্মেলনের স্থানটি আগে থেকেই গুছিয়ে রাখতে হবে। সম্মেলন স্থলে বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন, সত্যেন দা, রণেশ দার ছবি পোস্টার ইত্যাদি দেয়ালে ঝুলানোর ব্যবস্থা করে উৎসব মুখর পরিবেশ তৈরি করা যেতে পারে। আগে থেকেই শব্দযন্ত্র ইত্যাদি ঠিক করে রাখতে হবে। সম্মেলনের পূর্বে এলাকার যে সকল স্থানে জনগণের এবং সংস্কৃতি কর্মীদের জমায়েত, আড্ডা, চলাচল ও ওঠা বসা চলে সে সকল স্থানে প্রচারমূলক কাজ হিসেবে পোস্টার, দেয়াল লিখন ইত্যাদি করতে হবে।

সাংগঠনিক অধিবেশন
শাখা সম্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশনে শাখার প্রত্যেক সদস্য প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহনের অধিকারী।

সাংগঠনিক অধিবেশনের  কার্যক্রম

১। সভাপতি/সভাপতিমণ্ডলী নির্বাচন
২। উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দের আসন গ্রহণ
৩। শোক প্রস্তাব গ্রহণ ও নিরবতা পালন
৪। আলোচ্যসূচী অনুমোদন
৫। বিষয় নির্বাচনী কমিটি গঠন
৬। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন পেশ
৭।  সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনের উপর প্রতিনিধি/পর্যবেক্ষকদের আলোচনা, উর্দ্ধতন কমিটির নেতৃবৃন্দের আলোচনা ও প্রতিবেদন অনুমোদন।
(এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন ব্যক্তি সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন নয়। এটি কমিটির প্রতিবেদন। কমিটির সভায় সম্মেলনের আগেই এটি উপস্থাপিত ও অনুমোদিত হবে। কমিটির সদস্যরা সাধারণত প্রতিবেদনের উপর সম্মেলনের দিন আলোচনা করবে না। কমিটি বহির্ভূত অন্য সদস্যরা আলোচনা, সংযোজন, সংশোধন ইত্যাদি করবেন। সম্মেলনে সকল প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষককে প্রতিবেদনের কপি সরবরাহ করার প্রস্তুতি রাখতে হবে।ু
৮। আয় ব্যয়ের হিসাবের প্রতিবেদন প্রদান ও অনুমোদন (আয় ব্যয়ের হিসাব অবশ্যই দেশের প্রচলিত হিসাব পদ্ধতিতে নিরীক্ষিত লিখিত হতে হবে। প্রতিনিধি পর্যবেক্ষকদের কপি সরবরাহ করতে হবে।)
৯। বিষয় নির্বাচনী কমিটি কর্তৃক সাংগঠনিক প্রস্তাব, বিশেষ প্রস্তাব, সম্মেলনের ঘোষণাও নতুন কমিটির নাম প্রস্তাব
১০। নতুন কমিটি নির্বাচন
১১। পরবর্তী জাতীয় পরিষদে শাখার প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য নির্বাচন;
১২। শপথ গ্রহণ।

বিষয় নির্বাচনী কমিটির গঠন, স্থায়িত্ব ও কার্যাবলী
বিষয় নির্বচনী কমিটি স্বল্প সময়ের জন্য গঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি। সম্মেলনে কাজের সুবিধার জন্য এই কমিটি শাখার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য, অভিজ্ঞ, নিয়মিত কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত হয়।  এই কমিটি যথাসম্ভব সীমিত রাখা  উচিত। বিষয় নির্বাচনী কমিটি আলাদা স্থানে সভা করে সাংগঠনিক প্রস্তাব, পরিকল্পনা ও বিশেষ প্রস্তাব ও নতুন কমিটির তালিকা খসড়া আকারে নির্বাচনী অধিবেশনে উপস্থাপন করবেন। বিষয় নির্বাচনী কমিটির সভায় উর্দ্ধতন কমিটির প্রতিনিধিও অংশ নেবেন। বিষয় নির্বাচনী কমিটির প্রস্তাব সমূহ অধিবেশনে গণতান্ত্রিক পরিবেশে আলোচিত হবে এবং সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে গৃহীত হবে।

সাংগঠনিক অধিবেশন
আলোচ্যসূচী অনুমোদিত হওয়ার পর ক্রম অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নিতে হবে। সাধারণ সম্পাদকের হাতের কাছে গঠনতন্ত্র, সভার কার্য বিবরণী খাতা, সদস্য ফরমের তালিকা সহ ফাইল, হিসাব খাতা সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ রাখতে হবে। আলোচনা শৃঙ্খলার মধ্যে রেখে সময় বিবেচনা করে সদস্যদের আলোচনার সময় নির্ধারণ করা যেতে পারে

সম্মেলনে উত্থাপনের জন্য সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু
পূর্বেই উল্লেখ করেছি সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনটি কমিটির প্রতিবেদন। তাই সম্মেলনের পূর্বেই তা কমিটির সভায় গৃহীত হতে হবে। সাধারণ সম্পাদক যথাসম্ভব সংক্ষেপে  প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন। এলোমেলো বা অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা না দিয়ে প্রতিবেদনে মূল মূল বিষয় উল্লেখ করতে হবে। প্রতিবেদন  রচনার সুবিধার্থে নিচে কতক বিষয় উল্লেখ করা হল। সাধারণ সম্পাদক প্রয়োজন মনে করলে অন্য কোন বিষয় যুক্ত করতে পারবেন।
১। ভূমিকা: অভিনন্দন, শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।
২। শাখা বা জেলার কর্ম পরিধি / এলাকার আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার বিবরণ।
৩। অন্যান্য সামাজিক  সাংস্কৃুতিক সংগঠনের কার্যক্রম ও আমাদের সংগঠনের সাথে সম্পর্ক , প্রতিক্রিয়াশীলদের অবস্থা।
৪। শাখা কার্যক্রমের পর্যালোচনা, কেন্দ্রিয় কমিটি এবং উর্ধ্বতন কমিটি আহুত কর্মসূচী কতটুকু পালিত হয়, না হয়ে থাকলে তার কারণ,কর্মসূচী পালনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে শাখার উদ্যোগে বিশেষ কোন কর্মসূচী থাকলে তার বিবরণ অভিজ্ঞতা, এসব কর্মসূচীতে কমিটির সদস্যদের ভূমিকা সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। জাতীয় সম্মেলন, জাতীয় পরিষদ ও বিভাগীয় কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ ও কর্মসূচী বাস্তবায়নে শাখার তৎপরতা।
৫। বিগত সম্মেলনের তারিখ, কমিটির সদস্য সংখ্যা
৬। প্রতিমাসে কমপক্ষে একটি সম্পাদকীয় সভা, প্রতি দুই মাসে কমপক্ষে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভা হয় কিনা, মোট সভার সংখ্যা, উপস্থিতি, অনুপস্থিতি ইত্যাদি বিষয়। কেন্দ্র থেকে প্রেরিত সার্কুলার, জরুরী চিঠি, মোবাইল মেসেজ জেলা কমিটির মাধ্যমে শাখায় পৌঁছে কিনা, শাখার মোট সদস্য সংখ্যা, ভাই বোনের সংখ্যা আলাদা করে উল্লেখ করতে হবে। বিভাগীয় কার্যক্রমের বর্ণনা যেমন সঙ্গীত, নাটক, আবৃত্তি, সংগঠন বিভাগ ইত্যাদি। পারফমিং বিভাগসমূহের কার্যক্রম নিয়মিত কি’না, নতুন গান, নাটক ও অন্যান্য প্রযোজনা যদি থাকে তার বর্ণনা, লাইব্রেরি, বাদ্যযন্ত্র এবং অন্যান্য সম্পদের তালিকা, আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়মিত সংরক্ষণ করা হয় কিনা, তহবিল আছে কিনা, নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করা হয় কিনা, না হলে  কেন হয় না, অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কিভাবে সংগৃহীত হয় ইত্যাদি।

জেলা সম্মেলনের কার্যক্রম
জেলা সম্মেলনের প্রস্তুতি, কর্মসূচী, প্রতিবেদন প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয় শাখা সম্মেলনের জন্য বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করে চলবে। জেলা সংসদকে সম্মেলনের পূর্বে অবশ্যই সকল শাখা সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে। সাধারণভাবে জেলা সংসদের অন্তর্ভূক্ত সকল শাখা ও বিভাগের সদস্যগণ সাংগঠনিক অধিবেশনে প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহনের অধিকারী স্থান সংকুলান ও শৃংখলা ইত্যাদি বিবেচনায় জেলা সংসদ প্রয়োজনে সদস্য তালিকা অনুযায়ী শাখা ও জেলা সংসদের সদস্য অনুপাতে প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক নির্ধারণ করবে ( তবে তা কোন ক্রমেই জাতীয় সম্মেলনের জন্য কেন্দ্রীয় সংসদ কর্তৃক নির্ধারিত সদস্য অনুপাতে প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক হারের কম হবেনা)। সম্মেলনের তারিখ, স্থান, সময় ও আলোচ্যসূচী উল্লেখ কেের কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্বে সম্মেলনের নোটিশ সকল শাখায় পৌঁছে দেবেন।
সম্মেলনে গৃহীত প্রতিবেদন, নব নির্বাচিত কমিটির তালিকা, জাতীয় পরিষদ সদস্যের প্রস্তাবিত নাম (জেলার অন্তর্ভূক্ত শাখা সমূহের জাতীয় পরিষদ সদস্যের নাম সহ) অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রের কপি অবশ্যই কেন্দ্রীয় সংসদে পাঠাতে হবে।

সম্মেলনের পরবর্তী কাজ
সম্মেলনের পর যথাসম্ভব দ্রত সময়ের মধ্যে  নবগঠিত কমিটির সভা ডেকে সম্পাদকদের দায়িত্ব বন্টন ও বিভাগীয় কমিটি গঠন করতে হবে। সম্পাদকম-লীর গঠন পদ্ধতি গঠনতন্ত্রেই পরিষ্কার উল্লেখ আছে। সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক ,কোষাধ্যক্ষ ও সম্পাদকদের নিয়ে সম্পাদকম-লী গঠিত। সংগঠন, দপ্তর, সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি, চারুকলা, চলচ্চিত্র, প্রচার, প্রকাশনা, তথ্য ও গবেষণা, পাঠাগার ও পাঠচক্র ইত্যাদি বিভাগ সমূহে সম্পাদকদের অভিজ্ঞতা দক্ষতা হিসাবে রেখে একজনকে একাধিক দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। শাখার শক্তি ও ক্ষমতা হিসাবে রেখেই বিভাগ সৃষ্টি করা উচিৎ।  কোন কোন শাখায় সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহিলা সম্পাদিকা ইত্যাদি বিভাগীয় সম্পাদকীয় পদ সৃষ্টি করা হয়। এরকম কোন বিভাগ উদীচীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সহ-সভাপতি, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও কার্যকরি কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন বিভাগে যুক্ত করে বিভাগীয় কমিটি গঠন করতে হবে। যেমন সংগঠন বিভাগের কমিটি হবে নিুরূপ:
সহ-সভাপতিÑ১ জন
সহÑ সাধারণ সম্পাদক-১ জন
সম্পাদক- ১জন
সদস্য-১ বা একাধিক
এ বিভাগের নির্বাহী হবেন এর সম্পাদক। সম্পাদক এ বিভাগের সভা আহবান করে আগামী দুই বছরের পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। সেই পরিকল্পনা পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভায় অনুমোদন করতে হবে। এভাবে প্রত্যেক বিভাগ স্ব স্ব পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা মূল কমিটিতে উত্থাপন  করবেন।

সভা আহ্বান পদ্ধতি
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পরিষদ ছাড়া বাকী সকল স্তরের যে কোন কমিটির সভা সাধারণ সম্পাদক উক্ত কমিটির সভাপতির সাথে পরামর্শক্রমে আহবান করবেন। জাতীয় পরিষদের সভা আহ্বান করবেন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি। শাখা সংসদের ক্ষেত্রে  কমপক্ষে ৩ দিনের নোটিশে পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভা ও ২৪ ঘন্টার নোটিশে জরুরী সভা আহবান করা যাবে। শাখায় সম্পাদকমন্ডলীর জরুরী সভা  ৬ ঘন্টার নোটিশে আহ্বান করা যাবে। জেলা সংসদের ক্ষেত্রে ৭ দিনের নোটিশে পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভা ৪৮ ঘন্টার নোটিশে জরুরী সভা এবং ৬ ঘন্টার নোটিশে সম্পাদকমন্ডলীর জরুরী সভা আহবান করা যাবে।
জেলা ও শাখা সংসদ প্রতি দুই মাসে কমপক্ষে ১টি কমিটির সভা করতে হবে। কোন কোন জেলা বা শাখায় মাসের পর মাস কোন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় না। অথচ ঐসব জেলা বা শাখায় নিয়মিত অনুষ্ঠানাদি হয়। এটি সাংগঠনিক দুর্বলতার পরিচায়ক। নিয়মিত সভা হলে যেমন যৌথ নেতৃত্ব গড়ে উঠে তেমনি সভায় যেহেতু সকলের মতামত প্রদানের সুযোগ থাকে কাজেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সকলের অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা তৈরী হয়। সভা না করলে একনায়কত্ব তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উদীচীর সংগঠনে একনায়কত্বের কোন স্থান নেই। জেলা সংসদের নেতৃবৃন্দ শাখা সংসদের সভায় মাঝে মাঝে অংশ নেবেন এবং কার্য বিবরণী খাতা দেখে পূর্বাপর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও সামগ্রিক কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা নেবেন।

যেকোনো সভার নোটিশে অবশ্যই সভার স্থান, তারিখ, সময় , আলোচ্যসূচি ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। আলোচ্যসূচি সম্পর্কে পূর্ব থেকে ধারণা থাকলে প্রত্যেক সদস্য সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ভেবেচিন্তে  প্রস্তুতি  নিয়ে সভায় যোগদিতে পারেন। ফলে সময়ের যেমন সাশ্রয় হয় অন্যদিকে নির্ভূল ও বাস্তবোচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ  সহজ হয়। সভার নোটিশ লিখিত চিঠির মাধ্যমে করা গেলে সবচেয়ে ভাল। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে মোবাইল ফোনের সাহায্যে সংক্ষিপ্ত বার্তা (ঝগঝ) এর মাধ্যমে খুব দ্রুততার সাথে সভার নোটিশ পৌঁছানো যায়। সভায় প্রত্যেক সদস্যকে অবশ্যই সময়মত উপস্থিত হতে হবে। কোন বিশেষ কারণে কোন সদস্য সভায় যোগদানে দেরী হলে অথবা না আসতে পারলে আগে থেকে সাধারণ সম্পাদককে জানাবেন। কিন্তু যদি দেখা যায় কোন সদস্য বরাবরই দেরীতে সভায় উপস্থিত হন গুরুত্বপূর্ণ কাজের অজুহাতে বেশিরভাগ সভায় অনুপস্থিত থাকেন এবং দেরীতে বা না আসার বিষয়ে সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করায় প্রয়োজন বোধ না করেন তাহলে বুঝতে হবে সেই সদস্য সংগঠনের সভায় উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে আন্তরিক নন। নিজের ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ অগুরুত্বপূর্ণ সকল কাজই তার কাছে সংগঠনের চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত সদস্যদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্যপদ স্থগিত হয়ে যায়। একাধিক বৈঠকে কোন কারণ দর্শানো ছাড়া অনুপস্থিত সদস্যদের কাছে চিঠি দিয়ে বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে সক্রিয় করার উদ্যোগ নিতে হবে তাতেও কাজ না হলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া কোন উপায় নাই। কেননা নিস্ক্রিয়তা একটি ব্যাধি এটি অন্যদেরকে স্ক্রংমিত করতে পারে।
উদীচীর প্রত্যেক সদস্য হবেন সময়ানুবর্তী । সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারলে তা পরে বোঝা হিসাবে দেখা দেয়। বিকাল ৫টার সভা যদি ৬টায় শুরু হয় তবে যে বন্ধুটি নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হলেন তার উপর ঋণাত্বক প্রভাব পড়ে। যদি এভাবে প্রতিটি সভা দেরীতে শুরু হয় তবে  তিনি আস্তে আস্তে সময়ের ব্যাপারে শিথিল হয়ে যান। এভাবে গোটা সংগঠনের শিথিলতা তৈরী হয়। সভায় দেরীতে উপস্থিত সদস্য আগের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে যেমন অনবহিত থেকে যান তেমনি নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচীতে তাঁর গুরত্বপূর্ণ মতামত থেকে সংগঠন বঞ্চিত হয়। সুতারাং যথাসময়ে সভায় উপস্থিতি এবং নিদির্ষ্ট সময়ে সভা শুরু করা দুইটিই প্রয়োজনীয়।

সভার কার্যক্রম
১। সভাপতি নির্বাচন
২। শোক প্রস্তাব গ্রহণ (যদি থাকে)
৩। আলোচ্যসূচি অনুমোদন
৪। দুই সভার মধ্যবর্তী সময়ের কাজের রিপোর্ট পেশ (সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক) ও
পূর্ববতী সভার সিদ্ধান্ত সমূহ পর্যালোচনা।
৫। প্রত্যেকটি আলোচ্যসূচী নিয়ে আলাদা আলাদা আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
৬। সিদ্ধান্ত খাতায় সভার উপস্থিতি স্বাক্ষর গ্রহণ।

কমিটির সভায় সভাপতি উপস্থিত থাকলে তিনিই সভাপতিত্ব করবেন। তার অনুপস্থিতিতে ক্রম অনুসারে উপস্থিত সহ- সভাপতি সভাপতিত্ব করবেন। সভা সঞ্চালন করবেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক। সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে ক্রম অনুসারে সহ সাধারণ সম্পাদক সঞ্চালনের দায়িত্ব পালন করবেন।
সভায় যে কোন আলোচ্যসূচীর উপর আলোচনা করার অধিকার সকল সদস্যের আছে। কিন্তু আলোচনায় যেন কোন বিষয়ে পুণরাবৃত্তি  না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত ও তথ্যভিওিক আলোচনা চাই। সকল বিষয়ে কথা বলতে হবে এমন নয়। একজনের আলোচনার সময় অন্যজন যেন গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদানের নামে ঢুকে না পড়ে এজন্য যে কোন পয়েন্ট তা যত গুরুত্বপূর্ণই হোক সভাপতির অনুমতি নিয়ে উপস্থাপন করতে হবে। অনেক সময় সভা চলছে একদিকে , অন্যদিকে কয়েকজন সদস্য অন্য বিষয় নিয়ে খোশ গল্প করছেন, হাসি ঠাট্টা করছেন এটা মোটেই সমীচীন নয়। সভা অবশ্যই যান্ত্রিক হবেনা, হবে প্রাণবন্ত কিন্তু তা যেন সীমা ছাড়িয়ে খেলো না হয়ে যায়।

কার্যবিবরণী খাতা
প্রত্যেক সভার কায়বিবরণী অবশ্যই নিদির্ষ্ট কার্যবিবরণী খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হবে। দেখা যায় প্রত্যেক সভার কার্যবিবরণী লেখার দায়িত্ব একজনের কাঁধেই বর্তায়। কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে কার্যবিবরণী লেখায় অভিজ্ঞ হতে হবে। সেজন্য পালা করে একেকদিন একেকজনকে এই দায়িত্ব দেওয়া উচিত। অনেক সময় কার্যবিবরণী খাতা খুঁজে পাওয়া যায় না। সভায় বসে খুচরো সাদা কাগজে দায়সারা ভাবে কার্যবিবরণী লেখা হয় পরে ঐ খুচরো কাগজ আর খুঁজে পাওয়া যায় না। সিদ্ধান্তগুলো ঠিক মতো লেখা হয় না। কোন কোন সভায় বক্তার বক্তব্যর সাথে লিখে রাখা বক্তব্যর মিল খূঁজে পাওয়া যায় না। যার ফলে পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। কার্য বিবরণী খাতায় উপস্থিতি স্বাক্ষর গ্রহণ করলে কার্যবিবরণী লেখা বিঘিœত হয়। তাই আলাদা সিদ্ধান্ত খাতায় ((জবংঁষধঃরড়হ) উপস্থিতি স্বাক্ষর ও সিদ্ধান্ত সমূহ লিখতে হবে। সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করণে কাটাকাটি এড়াতে সভা চলাকালীন আলাদা কাগজে লিপিবদ্ধ করে  চুড়ান্তভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত উক্ত খাতায় তুলতে হবে।

কোরাম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি
সভায় এক তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতি কোরাম হিসাবে গণ্য হবে। অনেক সময় কোরামের অভাবে সভা বাতিল হয়ে যায়। ৫টার সভা শুরু করতে ৭টা বেজে যায় এমন অবস্থা সত্যিই দুঃখজনক। সভায় যথাসময়ে উপস্থিত হওয়া প্রত্যেক সদস্যের জন্য বাধ্যতামুলক। এই শৃঙ্খলা উদীচীর সদস্যদের স্বতস্ফূর্ত শৃঙ্খলা। এটা কোন চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। সভায় অংশ গ্রহণের দায় তৈরী হয় উদীচীর কর্মীর ভেতর থেকে। সভায় কোন কারণে অংশ না নিতে পারলে উদীচীকর্মীরা মর্মপীড়ায় ভোগেন। উদীচীর যে কোন সাংগঠনিক কাঠামোর সভায় যে কোন সিদ্ধান্ত সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিওিতে গৃহীত হয়। আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের  ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ উদীচী সংগঠনের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু কোন সুনিদির্ষ্ট বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হলে বা কোন সদস্য তার মতামতের উপর ভোট দাবী করলে প্রয়োজনে ভোটাভুটির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। (কিন্তু উদীচীর গঠনতত্র বা ঘোষণাপত্রের পরিপন্থী কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার  বা ক্ষমতা কারো নেই।)

ভিন্নমত প্রসঙ্গে
গৃহীত সিদ্ধান্ত যদি কোন সদস্যের মনপূত না হয়, যদি তিনি ভিন্নমত পোষণ করেন তাহলে তিনি দুইটি অধিকার সংরক্ষন করেনÑ
১। নিজের ভিন্নমতটি (নোট অব ডিসেন্ট) তিনি কার্যবিবরণী খাতায় লিপিবদ্ধ করিয়ে নিতে পারেন।
২। ভিন্ন মতটি তিনি উর্দ্ধতন কমিটিকে জানাতে পারেন।
মতামত, ভিন্নমত যাই থাকুক না কেন সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পর গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। নিজের ভিন্নমত বাইরে যেমন বলা যাবে না তেমনি ভিন্নমতের কারণে সংগঠনের কর্মকাণ্ডে নিস্ক্রিয় থাকা যাবে না। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠের  সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয় তাহলে পূর্বের ভিন্নমত সহ নতুন ভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রত্যেকে যদি নিজের মতকে চরম সত্য মনে করেন এবং নিজের মত জোর করে চাপিয়ে দিতে চান তবে সংগঠনের কোন কাজে সফলতা আসবেনা এবং সংগঠনের ঐক্য বিনষ্ট হবে। সংগঠনের হিত চিন্তা করে সঠিক পথে পৌঁছানোর পথ ও দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক, এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু সভায় ঘন্টার পর ঘন্টা একই বিষয়ে অযথা বাক বিতণ্ডা করা ব্যক্তিগত আক্রমন প্রতি আক্রমন কিছুতেই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।

সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহনের সময় বাস্তব অবস্থা ও সাংগঠনিক শক্তি বিবেচনায় রাখা উচিত। পরিকল্পনা নিতে হবে পরিমিত ও বাস্তব সম্মত। বিশাল উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা নিয়ে দশভাগ বাস্তবায়ন করতে পারা মোটেই সুবিবেচনাপ্রসূত নয়। বাস্তবায়ন যেন শতভাগ করা যায় সেই মত পরিকল্পনা নেয়া উচিত। মনে রাখতে হবে উদীচী সেই ধরনের অনুষ্ঠান করবে যা মানুষের মনে চিন্তার উদ্রেক হবে। মানুষ ভাবতে শিখবে,  সমাজের নানা ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে এবং এই সমাজকে ভেঙ্গে নতুন একটি সমাজ নির্মাণের প্রেরণা পাবে। উদীচী হাল্কা বিনোদনের জন্য অনুষ্ঠান করে না। উদীচীর অনুষ্ঠান একটি প্রগতিকামী  সংস্কৃতি গড়ে তুলে সমাজের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত। উদীচীর , গান, কবিতা, নাটক, নৃত্য হবে মানুষের সংকট সমস্যা দু:খ বেদনা হাসি আনন্দকে উপজীব্য করে। শোষণ বঞ্চনার অবসানের জন্য সংগ্রামে উদ্দীপ্ত করার প্রেরণা  থাকবে,  পরিবেশনা হবে শিল্পবোধ সম্পন্ন ও মান সম্পন্ন। সহজ সরল  ভাষা ও সুরের মাধ্যমে জনগণকে আকর্ষণ করতে হবে। বাংলার লোকজ সুরের বিশাল ভা-ার হতে পারে আমাদের বাণী ও সুরের অনন্য উৎস। আর এটা তখনই সম্ভব হবে যখন গ্রাম শহরের শ্রমজীবি মানুষের সাথে শিল্পীকর্মীদের যোগাযোগ নিকটতর হবে। সত্যেন দা যেমনি জমির আইলে বসে কৃষকের সাথে কথা বলতেন , কারখানায় গিয়ে শ্রমিকের সাথে মিশে যেতেন। তাদের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে গান বাঁধতেন , সাহিত্য রচনা করতেন। আমরা এটা প্রবলভাবে বিশ্বাস করি শ্রমঘনিষ্ঠ মানুষই পুরাতন সমাজ ভেঙ্গে নতুন সমাজ গড়ে তুলবে। তাই শিল্প সংস্কৃতিকে যদি এই শ্রমঘনিষ্ঠ মানুষদের চেতনার বাহন রূপে আমরা গড়ে তুলতে না পারি তবে আমাদের এই আন্দোলন গণ মানুষের চৈতন্যকে স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়ে নাগরিক মধ্যবিত্তের একটি ক্ষুদ্র অংশের কৃত্রিম সংস্কৃতিতে পরিণত হবে।
উদীচী সারা বছর কী ধরনের অনুষ্ঠানাদি আয়োজন করে তার একটি তালিকা এখানে সংযুক্ত করা হল।

পালনীয় অনুষ্ঠানের বর্ষপঞ্জী

অবশ্য পালনীয় অনুষ্ঠান:
০১ জানুয়ারি    সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংহতি দিবস
০৫ জানুয়ারি    সত্যেন সেন-এর মৃত্যুবার্ষিকী
১২ জানুয়ারি    মাস্টার দা সূর্য সেন-এর মৃত্যুবার্ষিকী
১৫ জানুয়ারি    রণেশ দাশগুপ্ত-এর জন্মবার্ষিকী
২১ ফেব্রুয়ারি    মহান শহীদ দিবস ও
আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস
০৬ মার্চ        যশোর হত্যা দিবস (সংস্কৃতি দিবস)
২৬ মার্চ        স্বাধীনতা দিবস
২৮ মার্চ        সত্যেন সেন এর জন্মবার্ষিকী
১৪ এপ্রিল     (১লা বৈশাখ) বাংলা নববর্ষ
০১ মে        মহান মে দিবস
০৮ মে (২৫ বৈশাখ) রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী
২৫ মে (১১ জৈষ্ঠ্য) নজরুল জন্মবার্ষিকী
০১ আগস্ট    মোস্তফা ওয়াহিদ খানের মৃত্যুবার্ষিকী (উদীচীর প্রথম সাধারণ সম্পাদক)
০৬ আগস্ট    (২২ শ্রাবণ) নজরুল মৃত্যুবার্ষিকী
১৪ আগস্ট    সুকান্ত জয়ন্তী
১৫ আগস্ট    জাতীয় শোক দিবস
২৭ আগস্ট(১২ ভাদ্র) নজরুল মৃত্যুবার্ষিকী
২৯ অক্টোবর    উদীচীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
০৪ নভেম্বর    রণেশ দাশগুপ্তের মৃত্যুবার্ষিকী
০৮ ডিসেম্বর    নেত্রকোণা হত্যা দিবস
১৪ ডিসেম্বর    শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
১৬ ডিসেম্বর    মহান বিজয় দিবস

পালনীয় অনুষ্ঠানসমূহ
০১  জানুয়ারি    পল্লীকবি জসিম উদ্দিন-এর জন্মদিন
২২ ফেব্রুয়ারি    চারণকবি মুকুন্দ দাসের জন্মদিন
০৮ মার্চ        আন্তর্জাতিক নারী দিবস
সোমেন চন্দ দিবস
১৮ এপ্রিল    ড. গোলাম মহিউদ্দিন‘র মৃত্যুবার্ষিকী
(উদীচীর সাবেক সহ-সভাপতি)
২২ এপ্রিল    লেনিন-এর জন্মদিন
০৫ মে         কার্ল মার্কস এর জন্মদিন
১৮ মে     চারণকবি মুকুন্দ দাস এর মৃত্যুবার্ষিকী
১৫ জুন        বর্ষাবরণ
১১ জুলাই    খগেশ কিরণ তালুকদারের মৃত্যুবার্ষিকী
(উদীচীর সাবেক সহ-সভাপতি)
১৪ জুলাই    উদীচীর প্রথম নারী শিল্পী রাজিয়া বেগমের মৃত্যুবার্ষিকী
২৬ জুলাই    শিল্পী আব্বাস উদ্দিন এর জন্মবার্ষিকী
১৭ আগস্ট    কবি শামসুর রাহমান এর মৃত্যুবার্ষিকী
১৪ সেপ্টেম্বর    রূপেশ বড়–য়া এর মৃত্যুবার্ষিকী
২৩ সেপ্টেম্বর    প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর আতœাহুতি দিবস
১৪ অক্টোবর    এড. হাবিবুর রহমান এর মৃত্যুবার্ষিকী
(উদীচীর সাবেক সহ-সভাপতি)
১৬ অক্টোবর     মনোরমা মাসিমা এর মৃত্যুবার্ষিকী
২৮ অক্টোবর     গণসঙ্গীত শিল্পী ফারুক ফয়সাল এর মৃত্যুবার্ষিকী
০৩ নভেম্বর     জেল হত্যা দিবস
১৯ নভেম্বর     সলিল চৌধুরী এর জন্মদিন
২০ নভেম্বর     কবি সুফিয়া কামাল এর মৃত্যুবার্ষিকী
০৮ ডিসেম্বর     আলোকময় নাহা এর মৃত্যুবার্ষিকী
(উদীচীর সাবেক সহ-সভাপতি)
২০ ডিসেম্বর     রুহুল হক খোকা এর মৃত্যুবার্ষিকী
(উদীচীর সাবেক সহ-সভাপতি)
২৩ ডিসেম্বর    শহীদ আলতাফ মাহমুদ এর জন্মদিন

এছাড়াও হেমাঙ্গ বিশ্বাস, আব্দুল লতিফ, শেখ লুৎফর রহমান, সুঞেন্দু চক্রবর্তী, অজিত রায়, পল রবসন, চে গুয়েভারা প্রমুখদেও জন্মদিন ও মৃত্যুদিবস পালন করা যায়।

সমালোচনা- আতœসমালোচনা
কাজ করতে গেলে ভুল ত্রুটি হওয়া অস¦াভাবিক কিছু  নয়। ভুল পরিহারকারী অকর্মা ও  প্রচুর ভুল সৃষ্টিকারী কর্মীদলের কথা রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতায় যথাক্্রমে ‘ টিকি’(চুল) ও হাত পায়ের রূপকের মাধ্যমে চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন :
টিকি মু-ে চড়ি উঠি কহে ডগা নাড়ি
হাত-পা প্রত্যেক কাজে ভুল করে ভারি
হাত-পা কহিল হাসি, হে অভ্রান্ত চুল
কাজ করি আমরা যে, তাই করি ভুল
নিজেকে নির্ভুল,পুত-পবিত্র দাবী করা যথার্থ সংস্কৃতিবান মানুষের পরিচায়ক নয়। ভুল ত্রুটিগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আর যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সে চেষ্টা করতে হবে এবং সেটি করতে হবে নির্দিষ্ট সাংগঠনিক ফোরামে। উদীচীতে সমালোচনা- আতœসমালোচনার রীতি রয়েছে। সমালোচনা হবে সংগঠনের ভালোর জন্য, ভুল ত্রুটি সংশোধন করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। কিছুতেই ব্যক্তি দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ নয়, সমালোচনা মানে অপরের দোষ ক্রুটির তালিকা তৈরী করা নয়। যখন কোন বন্ধু অন্য জনের সমালোচনা করবেন প্রথমেই তাঁর কাজ হবে যাঁর সমালোচনা করা হবে তার ইতিবাচক দিক গুলো তুলে ধরা এবং পরে নেতিবাচক দিকের সমালোচনা করা। সমালোচনা হবে বন্ধুসুলভ মানসিকতা নিয়ে। সমালোচনা হবে অবশ্যই যুক্তিনির্ভর ও তথ্যভিত্তিক। সমালোচনা মানে দীর্ঘ দিন থেকে জমিয়ে রাখা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নয়। ব্যক্তিগত ক্ষোভ বিক্ষোভ ও অসন্তোষ থেকে সমালোচনা করা হলে তা সংগঠনের ঐক্য ও শক্তিকে মারাতœকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কোন কোন বন্ধু আছেন যারা নিজেদেরকে মনে করেন ক্রুটিহীন এবং সমালোচনার উর্ধ্বে। তিনি নিজে শুদ্ধ অন্যরা অশুদ্ধ। অন্যের মতামতকে মোটেই গুরুত্ব দিতে চান না। হুংকার দিয়ে অন্যদেরকে থামিয়ে দেন। ন্যায্য সমালোচনা করলে চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। কমিটিতে এরা যদি উচ্চ পদস্ত হন তাহলেতো কথাই নেই। এ ধরনের আমলাতন্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। কেউ কেউ চোখা চোখা  শব্দ দিয়ে এমনভাবে অন্যকে ঘায়েল করেন যাতে অন্যে তার সমালোচনা করার সাহস হারিয়ে ফেলেন। সমালোচনা সামনে না করা একটি বড় সমস্যা। সমালোচনা করলে অন্যে যদি শত্রু ভাবে এই ভয়ে অনেকে সমালোচনা করতে চান না। আবার যার সমালোচনা করা হবে তিনি উপস্থিত থাকলে সমালোচনা হয় মৃদু বা একেবারেই নয় আবার তার অনুপস্থিতিতে আক্রমনাত্মক সমালোচনা হয়। যার সমালোচনা হচ্ছে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ থাকলোনা। শুনলেন অন্যের কাছ থেকে। যিনি শুনালেন তিনি আবার সত্যের সাথে কিছু মিথ্যার মিশেল দিয়ে কান ভারী করলেন। এতে করে সদস্যদের মধ্যে দুরত্ব তৈরী হয়। তৈরী হয় অবিশ্বাস , অশান্তিদায়ক পরিবেশ। সংগঠনে ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ বড় করে দেখা অনুচিৎ। তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করাও অনুচিৎ। ছোট খাটো বিরোধ গুলো সংশোধনের চেষ্টা করা, অন্যের সাথে কোন কারণে ভুল বুঝাবুঝি হলে তার বাসায় গিয়ে বা একান্তে আলাপ করে তার অবসান ঘটানো যায়। অনেকইে আছেন যারা অন্যদের কাছ থেকে কেবল স্তুতি শুনতেই পছন্দ করেন। সমালোচনা শুনতে মোটেই অভ্যস্ত নন। আবার কেউ কেউ আছেন যারা অন্যদের গঠনমুলক সমালোচনা না করে কেবল তোষামোদ করেন। এরা দু পক্ষই সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর। পরনিন্দাকে নিরুৎসাগিত করতে হবে । যেহেতু উদীচী একটি পরিবার। তাই কারও সম্পর্কে নিন্দাকারী ব্যক্তির নিন্দা শ্রবণ না করার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে যার নিন্দা করা হচ্ছে তার সাথে সরাসরি কথা বলার পরামর্শ দিতে হবে। কান কথায় প্রভাবিত হয়ে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ এমনকি ক্ষুব্ধ হওয়াও সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর। কারও দোষ ত্রুটি প্রথমেই সর্বসমক্ষে উপস্থাপন না করে তার সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে হবে। এতে অনেক বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত থাকা যায়।
ভাল সংগঠক তিনিই যিনি নিজের দোষ ত্রুটি অকপটে স্বীকার করেন। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করেন। নিজের সমালোচনা করতে পারেন এবং অন্যের গঠনমুলক সমালোচনার মাধ্যমে ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিয়ে সংশোধনের উদ্যোগ নেন। সমালোচনা আতœসমালোচনা সংগঠনকে দুর্বল করেনা বরং শক্তিশালী করে। সমালোচনাকে অবহেলা করলে বা অগ্রাহ্য করলে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। অসন্তোষ থেকে শেষ পর্যন্ত উপদলীয় কোন্দল পর্যন্ত গড়াতে পারে। সমালোচনা – আতœসমালোচনা পদ্ধতি চালু করার ব্যাপারে নেতৃত্বকেই উৎসাহিত করতে হবে। উপরের কমিটিতে নিয়ম নীতি চালু না করে নীচের কমিটিতে চালু করা যায় না।

গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা
উদীচী এক শিলা বিশিষ্ট জাতীয় সংগঠন। সংগঠনের সকল কর্মকা- পরিচালিত হয় একটি মাত্র কেন্দ্র থেকে। সংগঠনের সর্বোচ্চ ফোরাম হলো জাতীয় সম্মেলন।  প্রতি দুই বছর পর পর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সম্মেলনের আগে সকল শাখা ও জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সম্মেলনে প্রত্যেক শাখা এবং জেলার সদস্য অনুপাতে প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক অংশ গ্রহন করেন। জাতীয় সম্মেলনে সংগঠনের গঠনতন্ত্র-ঘোষণাপত্রের সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন, ও সাংগঠনিক পরিকল্পনা গৃহীত হয় প্রতিনিধি পর্যবেক্ষকদেও মতামত অনুযাযী এবং প্রয়োজনে ভোটাভুটির মাধ্যমে।  নতুন কেন্দ্রীয় সংসদও নির্বাচিত হয় একই প্রক্রিয়ায়। দুই সম্মেলনের মধ্যবর্তী সময়ে জাতীয় পরিষদই সর্বোচ্চ সংস্থা এবং নীতি নির্ধারনের অধিকারী।  কেন্দ্রীয় সংসদ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত ,প্রস্তাব ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও গঠনতন্ত্র রক্ষার জন্য দায়বদ্ধ। কেন্দ্রীয় সংসদই দৈনন্দিন কার্যক্রমের মাধ্যমে গোটা সংগঠনকে নেতৃত্ব প্রদান করে। যে কোন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্ত সমুহ মেনে চলা গোটা সংগঠনের জন্য বাধ্যতামূলক। সংগঠনের সকল সাংগঠনিক নি¤œতর কমিটিগুলো উচ্চতর কমিটির সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য থাকবে। অর্থাৎ উদীচীর সর্বোচ্চ সাংগঠনিক স্তরও পরিচালিত হয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ সদস্যদেও মতামতের দ্বারা আবার সকল সাংগঠনিক স্তরকে উর্দ্ধতন কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হয়। এটাই গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা।
উদীচীর সাংগঠনিক স্তরসমুহ নি¤œরূপ:
জাতীয় সম্মেলন
জাতীয় পরিষদ
কেন্দ্রীয় সংসদ
জেলা সংসদ
শাখা সংসদ

উপদেষ্টা পরিষদ
প্রত্যেক শাখা ও জেলা সংসদ স্থানীয় প্রয়োজন অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করবে। সাধারণ ভাবে উদীচীর ঘোষণাপত্র ও আদর্শ উদ্দেশ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কবি সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও অন্যান্য শ্রেণী পেশার চিন্তাশীল বিশিষ্টজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা যেতে পারে। সময়ে সময়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা আহবান করা তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময়ের মাধ্যমে উদীচীর কর্মকা- ব্যাখ্যা করা, তাঁদেও পরামর্শ ও সহযোগিতা নেয়া এবং বিভিন্ন কর্মসূচীতে এদেরকে যুক্ত করার মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদকে সক্রিয় রাখতে হবে। এছাড়াও উদীচীর বিভিন্ন সংকলন, উদীচী বার্তা ইত্যাদি পৌঁছে দেয়া ,ব্যক্তিভাবে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বৃহত্তর বুদ্ধিজীবী সমাজের সাথে সংগঠনের সেতুবন্ধন রচনায় উদ্যোগ নেয়া দরকার।

অর্থ সংগ্রহ ও হিসাব রক্ষন
উদীচীর অন্য সকল কর্মকান্ডের মাঝে অর্থ সংগ্রহ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। উদীচীর প্রত্যেক সদস্য তার উপর নির্ধারিত সদস্য চাঁদা নিয়মিত পরিশোধ করবেন এবং নিয়মিত জনগনের কাছ থেকে সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করবেন। উদীচীর সামগ্রিক কর্মকা- যেহেতু জনগনের জন্য নিবেদিত তাই তার অর্থের উৎসও জনগন। নির্দিষ্ট দুএকজনের পকেটের টাকায় উদীচী পরিচালিত হয়না। উদীচীর সংগঠনের পরিচালনার অর্থ কোন অদৃশ্য উৎস থেকেও আসেনা। আমরা সকলেই জানি প্রত্যেক শাখা ও জেলা কমিটিকে স্ব উদ্যোগে অর্থ সংগ্রহ করতে হয়। তাই প্রত্যেক শাখাকে অর্থ সংগ্রহের একটি পরিকল্পনা নিতে হয়। উদীচীর শুভান্যুধায়ী, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছ থেকে এবং ব্যাপক গণচাঁদা সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে একদিকে যেমন অর্থ সংগৃহিত হয় অন্যদিকে গণমানুষের সাথে সংগঠনের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। চিন্তার ও ভাবের আদান প্রদান হয়। সেজন্য গণচাঁদা সংগ্রহের প্রতি প্রত্যেক শাখাকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। সংগৃহিত অর্থের হিসাব রাখাও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার বিষয়। যেকোন অনুষ্ঠানের খরচের হিসাব সাতদিনের মধ্যে সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। দেশের প্রচলিত হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রত্যেক শাখার কোষাধ্যক্ষ যাবতীয় হিসাব সংরক্ষন করবেন এবং প্রত্যেক সভায় এসংক্রান্ত রিপোর্ট দেবেন। অনেক ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের কোন উদ্যোগ না নেয়ার ফলে এক-দুইজনের পকেট থেকেই অর্থ ব্যয় হয়। তার কোন হিসাবও রাখা হয়না। এধরণের  অভ্যাস বেশীদিন চলতে থাকলে সংগঠনও পকেটস্থ হয়ে যায়। পকেটস্থ সংগঠন কোনও এক সময় মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। সুতরাং প্রত্যেক অনুষ্ঠান তা যত বড় বা ছোট হোক না কেন অবশ্যই তার একটি আর্থিক পরিকল্পনা থাকা চাই। পরিকল্পনা নিয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রত্যেক সদস্য যদি আন্তরিক ভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেন, জনগণের কাছে যান তবে জনতা কখনও উদীচীকে ফিরিয়ে দেয় না। অভিজ্ঞতা আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়।

অধ্যয়ণ
উদীচী  কর্মীদেরকে সকল সময় আধুনিক হতে হয়। কাজেই পরিবর্তিত সময়ের জ্ঞান-বিজ্ঞান রাজনীতি , অর্থনীতি, দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে আমাদেরকে

সাধারণ পাঠ্যসূচি

ক্রমিক    গ্রন্থের নাম    গ্রন্থকার
১    যে গল্পের শেষ নেই    দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
২    ছোটদের রাজনীতি    নীহার রঞ্জন রায়
৩    ছোটদের অর্থনীতি    ’’
৪    সমাজ সভ্যতার ক্রমবিকাশ    রেবতী বর্মণ
৫    পৃথিবীর ঠিকানা    অমল দাশগুপ্ত
৬    মানুষের ঠিকানা    ’’
৭    জীবনী গ্রন্থ – মার্কস, এঙ্গেলস, লেনিন
৮    পৃথিবীর ইতিহাস, প্রাচীন যুগ    প্রগতি প্রকাশনা, মস্কো
৯    ভারত বর্ষের ইতিহাস    ’’
১০    অ ংযড়ৎঃ ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ঃযব ড়িৎষফ    ’’
১১    বিশ্ব ইতিহাস প্রসঙ্গ    ’’
১২    আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস    জওহরলাল নেহেরু
১৩    আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস    কিরণ চন্দ্র রায় বা যে কোন লেখক
১৪    ভারতের কৃষক বিদ্রোহ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাস    সুপ্রকাশ রায়
১৫    ভারতের বৈপ্লবিক সংগ্রামের ইতিহাস    ’’
১৬    চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও বাংলাদেশের কৃষক    বদরুদ্দিন উমর
১৭    মার্কসবাদ    এমিল বার্নস
১৮    ধর্ম ও সমাজ     জর্জ টমসন
১৯    সাহিত্য প্রসঙ্গে    মাও সে তুঙ
২০    প্যারী কমিউন
২১    মে দিবসের ইতিহাস
২২    রাজনৈতিক অর্থনীতি    এ. লিয়েনটিয়েভ
২৩    দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ    স্টালিন
২৪    লেনিনবাদের  ভিত্তি    ’’
২৫    ঙহ ঃযব ঙঢ়বৎধঃরড়হ    ’’
২৬    মার্কসবাদের সমস্যা     প্লেখানভ
২৭    গড়হরংঃ ারবি ড়ভ যরংঃড়ৎু
২৮    ষবপঃঁৎবং ড়হ গধৎীরংঃ ঢ়যরষড়ংড়ঢ়যু    উধারংঃ মঁংঃ
২৯    দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ (উরধষবপঃরপধষ গধঃবৎরধষরংস)    অ. ঝবঃঁঢ়ঁষরহ
৩০    দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ    রাহুল সাংকৃত্যায়ন
৩১    দর্শন-দিগ্দর্শন    ’’
৩২    গ্রীক দর্শন প্রবক্তা ও প্রসার    আবদুল হালিম
৩৩    পৃথিবীর ইতিহাস    ’’
৩৪    দর্শনের ইতিকাহিনী    উইল ডুরাস্ট
৩৫    ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ডবংঃবৎহ ঢ়যরষড়ংড়ঢ়যু    ই.জঁংংবষ
৩৬    আমিনুল ইসলামের দর্শনের উপর লেখা সিরিজ
৩৭    পেশা নির্বাচনে একজন যুবকের চিন্তার প্রতিফলন মার্কস    অনুশীলনের প্রকাশিত
৩৮    স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালী    সতীশ পাকড়াশী
৩৯    আমাদের মুক্তির সংগ্রাম    মো. ওয়ালিউল্লাহ
৪০    আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর    আবুল মনসুর আহমদ
৪১    ভারত স্বাধীন হল    মাওলানা আবুল কালাম আজাদ
৪২    আমার জীবন ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি    মুজফ্ফর আহমদ
৪৩    শরৎচন্দ্র ও সামন্তবাদ, বঙ্কিম চন্দ্র ও কুমুর বন্ধন এবং আধুনিক ইউরোপীয় সাহিত্য প্রতিক্রিয়াশীলতা    সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
৪৪    রাজনৈতিক উপন্যাস    নাজমা জেসমিন চৌধুরী
৪৫    বিনয় ঘোস, অরবিন্দ পোদ্দার, অতুল সুর এর সাহিত্য, সমাজ সংস্কৃতি ও নৃতত্ত্ব বিষয়ক প্রবন্ধের বই
৪৬    সংস্কৃতির রূপান্তর    গোপাল হালদার
৪৭    ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর ও উনবিংশ শতাব্দির বাঙালী সমাজ    বদরুদ্দীন ওমর
৪৮    আমার জীবন ও বিভাগ পূর্ব বাংলার রাজনীতি    আবুল হাশেম
৪৯    ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ৎবষবমরড়হ    চৎড়মৎবংং
৫০    বলশেভিক পার্টির ইতিহাস
৫১    গন্তব্যের অনুসন্ধানে    রতন সিদ্দিকী
৫২    পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন    যতীন সরকার
৫৩    জালাল খাঁ রচনা সমগ্র    ’’
৫৪    সংস্কৃতির সংগ্রাম    ’’

ক্স    রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক ভূগোল এর উপর বই এবং মানচিত্র অধ্যায়ন।
ক্স    প্রচলিত ডিগ্রী ক্লাস মানের ‘দর্শনের সমস্যা সংক্রান্ত কোন বই অধ্যায়ন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসের বইসমূহ পড়া। মনস্তত্বের বই অধ্যায়ন। যুক্তিবিদ্যা অধ্যায়ন।
ক্স    প্রকৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার উপর অধ্যায়ন। গধঃযবসধঃরপ ঝঃঁফু
ক্স    বিপ্লবী সাহিত্য যেমন মা , ইস্পাত, ল-জুনের লেখা ইত্যাদি বই অধ্যায়ন।
ক্স    বুর্জোয়া প্রগতিশীল সাহিত্য যেমন শেক্সপীয়র, টলস্টয়, বালজাক, নাজিম হিকমত, মিলয়ের, স্তেকভ, ব্রেশর্ট এদের সাহিত্য কর্ম অধ্যায়।
ক্স    বাংলা ও ভারতীয় বুর্জোয়া প্রগতিশীল সাহিত্য যেমন মানিক, তারাশংকর, সতীনাথ ভাদুড়ী, সা’দত হাসান মান্টেন, কৃষাণ চন্দর, উসমাত চুখতাই, মুন্সী প্রেমচান্দ, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, ফয়েজ আহমদ ফয়েজ এদের লেখা অধ্যায়ন।
ক্স    দর্শন বা কাজের দিক্-নির্দেশনা-দ্বান্দ্বিক বন্তুবাদ (চযরষড়ংড়ঢ়যু ড়ৎ মঁরফব ঃড় ধপঃরড়হ- উরধষবপঃরপধষ গধঃবৎরষরংস)
ক্স    শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রসঙ্গে – মার্কস, এঙ্গেলস ও লেনিনের রচনা
১.    যুবলীগের কর্তব্য- লেনিন
২.    মার্কসবাদের ঐতিহাসিক বিকাশের তিনটি বৈশিষ্ট (দর্শন অংশ)- লেনিন
৩.    অর্থশাস্ত্রে সমালোচনামূলক গ্রন্থের ভূমিকা- মার্কস-এঙ্গেলস রচনা সংকলন        – ৪ খ-
৪.    ফয়েরবাখ ও চিরায়ত জার্মান দর্শনের অবসান                                      – ঐ
৫.    থিসিস অব ফয়েরবাখ                                                                – ঐ
৬.    প্রকৃতিতে দ্বান্দ্বিকতার ভূমিকা                                                        – ঐ
৭.    ‘পুঁজি’ গ্রন্থের ভূমিকা                                                                 – ঐ
৮.    দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে- চযরষড়ংড়ঢ়যরপধষ হড়ঃব নড়ড়শং, ঈড়ষষবপঃবফ ড়িৎশং াড়ষ-৩৮-লেনিন- ৪ খ-
৯.    গধঃবৎরধষরংস ধহফ ঊসঢ়ড়ৎবং পৎরঃরপরংস                                      – ঐ
১০.    এন্টি ড্যুরিং দর্শন থেকে                                                              – এঙ্গেলস
১১.    দর্শনের দারিদ্র                                                                         – মার্কস
১২.    চযরষড়ংড়ঢ়যরপধষ ধহফ ঊপড়হড়সরপ গধহঁংপৎরঢ়ঃ ড়ভ ১৮৪৪-৪৫           – মার্কস
১৩.     ঈধঢ়রঃধষ                                                                                – মার্কস