অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে উদীচী’র তীব্র নিন্দা দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি

মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক, বিজ্ঞানী এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক অভিজিৎ রায়কে রাতের আঁধারে কাপুরুষের মতো পেছন দিক থেকে হামলা করে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক বার্তায় উদীচীর কেন্দ্রীয় সভাপতি কামাল লোহানী ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথিতযশা অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ শুধুমাত্র একজন প্রগতির পক্ষের অনন্য প্রতিভাবান লেখকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন উঁচু মানের প্রকৌশলী। মৌলবাদ, ধর্মান্ধতা, ধর্ম নিয়ে ব্যবসা, সাম্প্রদায়িকতা প্রভৃতির বিরুদ্ধে খুবই সোচ্চার ছিল অভিজিতের কলম। এসব বিষয় ছাড়া বিজ্ঞানের আলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে বই-ও লেখেন তিনি। এবারের অমর একুশে বইমেলায় দু’টি বই প্রকাশ উপলক্ষে মাত্র কয়েকদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ রায় সস্ত্রীক ঢাকা ফিরেছিলেন। আর সেই বইমেলা থেকে ফেরার পথেই তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র মতো জনবহুল একটি এলাকায়, বইমেলা চলাকালীন সময়ের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে যেভাবে খুনিরা হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর নির্বিঘেœ পালিয়ে যেতে পেরেছে, তাতে প্রশাসনের দক্ষতা আজ বিরাট প্রশ্নের সম্মুখীন বলে মন্তব্য করেন কামাল লোহানী ও প্রবীর সরদার।

বার্তায় উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্র“য়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে যে প্রক্রিয়ায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছিল, ঠিক সেই একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে অভিজিৎ রায়কে। এমনকি ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও ব্লগার রাজীব হায়দারের হত্যাকাণ্ডের ধরণের সাথেও এ হত্যার ঘটনার মিল খুব সহজেই ধরা পড়ে। আগের ওইসব হতাকাণ্ডের যথাযথ বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে হত্যাকারীদের যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা গেলে হয়তো অভিজিৎকে এভাবে প্রাণ দিতে হতো না বলেও মন্তব্য করেন তারা। একইসাথে যত দ্রুত সম্ভব অভিজিতের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান কামাল লোহানী ও প্রবীর সরদার।

উগ্র জঙ্গীবাদীদের হামলায় এদেশের মুক্তমনা ও প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার মানুষ বারবার নিহত হলেও এখনও সরকার কেন দেশে উগ্র জঙ্গিবাদের প্রধান মদতদাতা সংগঠন, মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে বিরোধিতাকারী জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করছে না সে প্রশ্ন তোলেন উদীচীর সভাপতি কামাল লোহানী ও প্রবীর সরদার। নিহত অভিজিৎ রায়ের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি হামলায় গুরুতর আহত তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার আশু আরোগ্যও কামনা করেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *